শিরোনাম
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করায় পোশাকশ্রমিকদের বড় একটি অংশই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এতে ঢাকার সাভারে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেডসহ শাখা সড়কে প্রায় ২৩ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। পাশাপাশি গণপরিবহন সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
শুক্রবার ঢাকার সাভারে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেডসহ শাখা সড়ক ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে আশুলিয়ার কারখানাগুলো। তাই দুপুরের পর থেকে বাসস্ট্যান্ডগুলো ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। কেউ আগে থেকেই কেটে রেখেছিল বাসের অগ্রিম টিকিট। কেউবা চলতি গাড়িতেও নানা ঝক্কি-ঝামেলা ঠেলে ওঠে যাচ্ছেন। তবে, যাত্রীর তুলনায় অপ্রতুল ছিল গণপরিবহন। তাই অনেকেই ট্রাক ও পণ্যবাহী গাড়িতে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
কথা হয় বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষায় থাকা পোশাকশ্রমিক মুজিবর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, জীবিকার জন্য স্ত্রী-সন্তাদের সঙ্গে বছরের কয়েকটি দিনই কাটাতে হয়। তাই যত কষ্টই হউক না কেন বাড়ি যেতেই হবে।
ক্ষোভ নিয়ে আরেক যাত্রী শারমিন বলেন, ঈদ এলে শিল্পাঞ্চলগুলোতে অতিরিক্ত বাস দেওয়ার কথা থাকলেও বাসের দেখা পাওয়া যায় না। তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে ওঠতে পারলাম না। আজও পারবো কিনা তাও বলা যাচ্ছে না। আমার মতো হাজার হাজার যাত্রী রয়েছেন বাসের অপেক্ষায়। শুধু বাইপাইল নয়, নবীনগর, জিরানী, ডিইপিজেডসহ প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেরই একই অবস্থা।
অন্যদিকে, সাভারের চারদিকে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের। তিনটি সড়কের ২৩ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে যানবহনের জটলা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ।
সন্ধ্যা সাতটায় সরেজমিনে দেখা ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের দুই লেনে পল্লীবিদ্যৎ এলাকা থেকে জিরানী পর্যন্ত আট কিলোমিটার যানজট। এছাড়া টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে বাইপাইল থেকে জামগড়া ও ধাউর থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার যানজট। অন্যদিকে, ঢাকা-আরিচা মহাড়কে গাড়ির চাপ না থাকলেও গাবতলী থেকে ৫ কিলোমিটার যানজটের তথ্য পাওয়া গেছে।
যানজট নিয়ে মনির হোসাইন বলেন, জিরানী থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাইপাইল যেতে সময় লাগে ৭/৮ মিনিট। অথচ সাড়ে তিন ঘণ্টায়ও পৌঁছাতে পারছি না। একেবারে ভোগান্তি শেষসীমায় আছি। মনে হয় কেউ সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন না।
অন্যদিকে, টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক দিয়ে আসা বাসচালক রহমত মিয়া বলেন, পুরোটা রাস্তায় যানজট দেখলাম। হেঁটে চলারও অবস্থা নেই। রাস্তায় গাড়ির প্রচুর চাপ।
ঢাকা উত্তর ট্রাফিক ইনর্চাজ (প্রশাসন) আব্দুস সালম বলেন, এখন রাস্তায় প্রচুর গাড়ির চাপ রয়েছে। অধিকাংশ পোশাক কারখানায় ছুটি হয়েছে। তাই সবাই বাড়ির উদ্দেশে ছুটছেন। এছাড়া যাত্রীবাহী বাসগুলো একটু পর পর থেমে থেমে যাত্রী ওঠানোর করণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যান চলাচল স্বাভাবিক করতে।
সূত্র: জাগো নিউজ