শিরোনাম
প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নদীতীরে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেও সফলতা আসছে না। ফলে বর্ষা মৌসুমে আবারও শুরু হয় নদীভাঙন, সম্পদ হারা হয় বহু মানুষ।
ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নে এ বছরও শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ফলে ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষের মধ্যে ভাঙনের আতঙ্ক বাড়ছে। ভাঙনের ফলে হুমকির মধ্যে রয়েছে সাঁড়ায় নদীর বামতীর সংরক্ষণ বাঁধ ও লালনশাহ সেতুরক্ষা বাঁধটি। আশঙ্কা রয়েছে ভাঙন ও পানির তীব্রতা বাড়লে হুমকির মধ্যে পড়তে পারে বাঁধটি।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষার শুরু হতে না হতেই এবার পদ্মার নদী বাঁধের সীমানার খুব কাছাকাছি ভাঙন এগিয়ে এসেছে। এতে নদীতীরবর্তী মানুষেরা বিশেষ করে রাতে অসহায় অবস্থায় আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন। ৬-৭ দিনের ব্যবধানে সাঁড়ার থানাপাড়া ও ব্লকপাড়ায় বাঁধের সামনের অংশ ভাঙছে। পানির চাপে এরই মধ্যে প্রায় ১০ বিঘা বাঁধের সামনের জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, দেশের বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ঈশ্বরদীর পদ্মা নদীতেও পানি বাড়ছে। সাত-আট দিনে নদীতে প্রায় পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে সাঁড়াঘাটের সীমানায়। পানি বাড়ার কারণে সাঁড়ার ৫ নম্বর ঘাটের সামনের চরের প্রায় ৫০ বিঘা অনাবাদি জমি বর্তমানে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ব্লকপাড়ার সামনে নদীর তীরে সরকারি উদ্যোগে তৈরি করা চিতল ও দেশীয় প্রজাতি মাছের অভয়াশ্রম সীমানার চিহ্নিতকরণও ভেসে গেছে।
সাঁড়ার ঝাউদিয়া গ্রামের দলিলুর রহমান বলেন, কয়েক মাস আগে সাঁড়ার এই নদীর পাড়ে সরকারি উদ্যোগে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। পানি বাড়তে থাকায় আবারও নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে বাঁধের প্রায় কাছে এসেছে। এতে আমরা আতঙ্কে আছি।
একই গ্রামের রফিকুল শেখ বলেন, সাঁড়ার ব্লকপাড়া বাঁধের কাছে নদীতে পানির চাপ খুবই বেশি। এখানে নিচে 'গলন' থাকায় পানির চাপে দুদিনে বাঁধের সামনে প্রায় ৬০ মিটার জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার বলেন, এর আগেও ভাঙন দেখা দেওয়ায় সাঁড়ার পদ্মার কয়েকটি স্পটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে তিন দফায় জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছিল। জিওপ্যাক ডাম্পিংয়ের ফলে তখন নতুনভাবে আর ভাঙন হয়নি। তবে এবারের পরিস্থিতি তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন। বিয়ারিত খবর নিয়ে তিনি ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানাবেন বলে উল্লেখ করেন।
নদীভাঙনের সত্যতা স্বীকার করে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান সুজন বলেন, ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিত এলাকা সরেজমিন দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া কিছু দিন আগেও সাঁড়ার এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়। তবে পরিস্থিতি গুরুতর হলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এমন পরিস্থিতিতে ভাঙন রোধের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরির কাজও চলছে।
সূত্র: যুগান্তর