শিরোনাম
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় দায়ের কোপ দিয়ে পুলিশ কনস্টেবল জনি খানের হাত বিচ্ছিন্নকারী কবির আহমদের অপকর্মে কেউ বাধা দিলেই তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা হতো। কবির একজন চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জমি দখলসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
শুক্রবার (২০ মে) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে র্যাব-৭-এর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কেউ তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপে বাধা দিলে তার উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করত। কবিরের নামে বিভিন্ন থানায় হত্যাচেষ্টা ও মারামারিসহ ৬টি মামলা রয়েছে।
এর আগে ১৯ মে (বৃহস্পতিবার) রাত ৮টার দিকে লোহাগাড়া থানার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে কফিল উদ্দিন (৩০) নামের এক সহযোগীসহ কবির আহমদকে (৪৩) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার করে র্যাব।
এসময় তাদের কাছ থেকে হামলায় ব্যবহৃত দা, একটি ওয়ান শুটার গান, তিন রাউন্ড গুলির খোসা, তিন রাউন্ড তাজা গুলি, দুইটি হাসুয়া, একটি ছুরি, ১৮০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া কফিলের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় মাদক, হত্যাচেষ্টা ও মারামারির ৬টি মামলা রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। কফিল লোহাগাড়া থানা এলাকার মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, পুলিশ সদস্য জনি খানের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনার পর কবির বান্দরবানের দক্ষিণ হাঙর এলাকায় গা ঢাকা দেন। তার আত্মগোপনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেনে গেছে আঁচ করতে পেরে সেখান থেকে স্থান পরিবর্তন করে। পরে লোহাগাড়ার বড়হাতিয়ার একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার রাতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৭ কবিরকে ধরতে অভিযান শুরু করে। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির গুলি ছোড়েন। তার গুলিতে র্যাবের সিপাহি মো. আকরাম আহত হন। পরে র্যাবও গুলি চালায়। এতে কবিরের পায়ে গুলি লাগে।
গত ১৫ মে সকালে লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়নের লালারখিল এলাকার মৃত আলী হোসেনের পুত্র আসামী কবির আহমদকে (৩৫) গ্রেফতারে অভিযান চালায় পুলিশ। লোহাগাড়া থানার এসআই ভক্ত চন্দ্র দত্ত, এএসআই মজিবুর রহমান, কনস্টেবল জনি খান ও শাহাদাত হোসেন পুলিশ পিকআপ নিয়ে কবির আহমদকে গ্রেফতারে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির আহমদ ধারালো দা দিয়ে পুলিশ সদস্য জনি খানের হাতে কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। দায়ের কোপে জনি খানের হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে। পরে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে র্যাবের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেসরকারি আল মানার হাসপাতালে ভর্তির পর ওই রাতেই তার হাতের কব্জি প্রতিস্থাপন করা হয়। আল মানার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকীর নেতৃত্বে ৫জন চিকিৎসক প্রায় ১০ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।
অন্যদিকে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় হামলাকারী কবির আহমদের স্ত্রী রুবি আকতারকে গত রোববার রাতে বান্দরবান পার্বত্য জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা লামা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সূত্র: জাগো নিউজ