শিরোনাম
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আজ নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে একটি বিস্তৃত চিত্র দেবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও উভয় মন্ত্রণালয়ের সচিবদের ব্যাপক পদক্ষেপ নিতে এবং সবার কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে বিষয়টি কীভাবে পরিচালনা করা যায়, কোথায় রেস্ট্রিকশন রাখতে হবে এবং কোথায় খুলতে হবে, তারা সে বিষয়ে আলোচনা করে প্রতিবেদন দেবে।
ডলারের দামের বিষয়টিও ঐ সমন্বিত প্রতিবেদনে থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভা হাট ও বাজার (প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২২ নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে, যেন এটি সময় উপযোগী করার জন্য ১৯৫৯ সালের একটি অধ্যাদেশ প্রতিস্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে ২৬টি ধারা রয়েছে। আইন অনুযায়ী সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া কেউ কোনো হাট-বাজার করতে পারবে না।
ব্যক্তি মালিকানায় কোথাও হাট-বাজার স্থাপন করা হলে তা সরকার খাসজমি হিসেবে অধিগ্রহণ করতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, হাট-বাজারের জমিগুলো জেলা প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা করবে এবং স্থায়ীভাবে কোনো জমি হস্তান্তর করা যাবে না।
প্রস্তাবিত আইনে কেউ বা একদল লোক অবৈধভাবে কোনো হাট-বাজারের খাস জমি দখল করে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে অনধিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২২’ মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে, যা ভূমি উন্নয়ন কর অধ্যাদেশ ১৯৭৬ প্রতিস্থাপন করবে।
‘আইন অনুযায়ী, ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমি ভূমি উন্নয়ন করমুক্ত থাকবে, যা বঙ্গবন্ধু করেছিলেন। কিন্তু, কেউ যদি ২৫ বিঘার বেশি জমির মালিক হন তাহলে সেই ব্যক্তিকে পুরো জমির জন্য কর দিতে হবে।
কোনো জমি একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন হলে সে ক্ষেত্রে ঐ জমির মালিকদের নির্দিষ্ট অংশ নির্ধারণের জন্য শুনানি হবে এবং এরপর ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করা হবে।’
টানা তিন বছরের বেশি ভূমি উন্নয়ন কর না দিলে বার্ষিক ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ জরিমানা হবে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক মালিকানাধীন কবরস্থানকে এই করের আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
ভূমি উন্নয়ন আইন, ২০২২ অনুসারে যা নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছিল, ১৯৮৪ সালের একটি অধ্যাদেশ প্রতিস্থাপন করবে, যদি কোনো কৃষি জমি রফতানি পণ্য উৎপাদন করে বা সেই জমিতে রফতানিমুখী কৃষি শিল্প স্থাপন করে, তাহলে একজন ব্যক্তির জন্য ৬০ বিঘা সিলিং প্রযোজ্য হবে না।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি জমির মালিক হতে পারবেন না, যদি কারো কাছে তা থাকে। সেই অতিরিক্ত জমি সরকার নেবে। এই আইন লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য হবে এবং ১ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা এক মাসের কারাদণ্ড।
এছাড়া, মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শারীরিক স্বাস্থ্যকে আরো গুরুত্ব দিতে ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি, বাংলাদেশ ২০২২’ খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা হয়েছে এবং অবহিত করা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর পরবর্তী স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলো চালানোর জন্য প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ বরাদ্দ করেছে। কারণ দেশটি কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে।
পদ্মাসেতু চালুর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আশা করেন, জুনের শেষ সপ্তাহে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আমরা সেটা করতে প্রস্তুত। আশা করছি, আমরা আগামী মাসের শেষ সপ্তাহের আগে সেতুটি খোলার জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হব। পদ্মাসেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অতীতে একাধিকবার সেতুর নাম পদ্মাসেতু হবে বলে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার করবেন।
যানবাহনের টোল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণত ফেরি টোলের চেয়ে দেড় গুণ বেশি টোল মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষকে এক শতাংশ সুদে টাকা সরকারকে ফেরত দিতে হবে।