শিরোনাম
করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। তবে সংক্রমণ কমে আসায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সেই পরিস্থিতি। খুলে দেওয়া হয়েছে এসব বিনোদন কেন্দ্র। খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শনার্থীদের প্রিয় স্থান জাতীয় চিড়িয়াখানা। শুধু তাই নয়, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নানা প্রস্তুতিও গ্রহণ করছে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জাতীয় চিড়িয়াখানায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বল্পমূল্যে খাবারের ব্যবস্থাসহ নতুনভাবে পুরো চিড়িয়াখানা সাজিয়ে তোলা হবে। এ ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় সাত লাখ দর্শনার্থীর আগমন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে চলতি সপ্তাহ থেকে ঈদ প্রস্তুতি শুরু করা হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় চিড়িয়াখানায় সরেজমিনে দেখা যায়, রোজার কারণে স্বল্পসংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। তাদের অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। কড়া রোদের মধ্যে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন কেউ কেউ।
চিড়িয়াখানায় গত সপ্তাহে ঘোড়ার পরিবারে নতুন সদস্য এসেছে। ঘোড়া শাবক দেখেতে সেখানে শিশুদের কিছুটা ভিড় দেখা যায়। নতুন করে অস্ট্রেলিয়া থেকে রেড ক্যাঙারু, অ্যারাবিয়ান লামা, আফ্রিকার সাদা পেলিক্যান পাখি, নীল ওয়ান্ডি বিস্ট ও সিংহ আনা হচ্ছে। প্রতিটি জাতের চারটি করে মোট ২০টি প্রাণী আনা হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর মো. মুজিবুর রহমান বলেন, অন্যান্য ঈদের মতো এবারও নানা প্রস্তুতি নেওয়া হবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তা বসানো হবে। ভেতরে বিভিন্ন স্থানে আনসার মোতায়েন করা হবে। চিড়িয়াখানা হকারমুক্ত থাকবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
রাজধানীতে বসবাসকারী মানুষের ঈদ বিনোদনের প্রধান কেন্দ্রস্থল মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। বিশেষ করে ছোটদের জন্য এ বিনোদন কেন্দ্রটি অন্যতম হলেও ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে এখানে সব বয়সী মানুষের সমাগম ঘটে। তবে চিড়িয়াখানায় প্রবেশে টিকিটের মূল্য আগের মতই রয়েছে। দুই বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে ৫০ টাকার টিকিট কেটে প্রবেশ করতে ঞয়। এছাড়া চিড়িয়াকানার ভেতরে অবস্থিত প্রাণী জাদুঘরে প্রবেশমূল্য ১০ টাকা।
ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে নানা সাজে সাজানো হয়েছে জাতীয় চিড়িয়াখানা। সিসিটিভিসহ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আলাদা পার্কিং সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। ঈদে উপচেপড়া মানুষের ভিড়ে প্রাণিকূলের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এ কারণে চিড়িয়াখানায় চারজন পশু চিকিৎসক নিয়োজিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি গরমে প্রাণিগুলোকে নিরাপদ রাখতে বাড়তি পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দেশের সবচেয়ে বড় ১৮৬ একর জায়জুড়ে অবস্থিত মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিনোদনকেন্দ্রে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসেন হাজারো দর্শনার্থী। চিড়িয়াখানায় রয়েছে মাংসাশী আট প্রজাতির ৩৮টি প্রাণী, ১৯ প্রজাতির বৃহৎ প্রাণী (তৃণতোজী) ২৭১টি, ১৮ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী ১৯৮টি।
এছাড়াও রয়েছে ১০ প্রজাতির সরীসৃপ ৭২টি, ৫৬ প্রজাতির ১ হাজার ১৬২টি পাখি, অ্যাকোয়ারিয়ামে রক্ষিত মৎস্য প্রজাতিসমূহের ১৩৬ প্রজাতির ২ হাজার ৬২৭টি প্রাণী। সবমিলিয়ে রয়েছে ১৩৭টি পশু-পাখির খাঁচা।
কিউরেটর মো. মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ঈদের আগে প্রাণীকূলের সেডগুলো দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হবে। গেটের বাইরে হকাররা যেন দর্শনার্থীদের বিরক্ত করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। চিড়িয়াখানাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে নতুন প্রাণী আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে প্রস্তুতি সংক্রান্ত কাজ শুরু করা হবে।
সূত্র: জাগো নিউজ