শিরোনাম
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিরোধ নেই বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অনেকেই ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত বা বিরোধ সৃষ্টি করতে চান, এটি সঠিক না।’
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নবনির্মিত আটটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, আমরা বাঙালি। আমাদের দেশে সব ধর্মের মানুষ বাস করে। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই তো আছে। আমরা এটাই বলি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। কাজেই সবাই উৎসব এক হয়ে পালন করবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এই যে সব ধর্ম-বর্ণ, বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, তাদের নিজস্ব যে সংস্কৃতি, অর্থাৎ শুধু ধর্মালম্বী না, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদেরও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা আছে, সংস্কৃতি আছে। সেগুলো যাতে বিকশিত হয়, সেদিকে দৃষ্টি রেখে প্রত্যেক এলাকায় তাদের সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ করে দিয়েছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে যেগুলো চলে আসছে, এগুলোও যাতে বিকশিত হতে পারে। বিশেষভাবে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। এগুলো আমাদের ঐতিহ্য, এগুলো আমরা ভুলবো না। কিন্তু আমরা সামনের দিকেও এগিয়ে যাবো। আধুনিক যুগের যত সংস্কৃতি, সেটাও রপ্ত করবো।’
সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমরা উদযাপন করি। এই একটা উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই, সব বাঙালি এক হয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। যেখানে সবার চমৎকার মিলনকেন্দ্র। প্রবাসীরাও পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ, যে পহেলা বৈশাখ পালন করতে গিয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ১৪০০ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে গিয়ে এটা ঘটেছিল, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনকি রমনার বটমূলে বোমা হামলা করেও মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল আমাদের এ সংস্কৃতির চর্চা বন্ধ করে দেওয়া।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ঐতিহ্য আমাদেরই ধারণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে চর্চা করতে পারে, বিকশিত করতে পারে এবং আরও আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সম্মিলন ঘটিয়ে যেন এটাকে আরও বেশি উৎকর্ষ সাধন করতে পারে, সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সেটাই আমরা দেবো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছি। এ অগ্রযাত্রা অবশ্যই আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
সংস্কৃতি চর্চাটা আরও সমৃদ্ধশালী করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েই আমাদের সংস্কৃতি চর্চাটা আরও সমৃদ্ধশালী করতে পারি। সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবো।’
এসময় সংস্কৃতি চর্চায় সহযোগিতা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকাশে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রান্ত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।
সূত্র: জাগো নিউজ