শিরোনাম
বাজার বসায় ও সংস্কারকাজ চলায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা আটটি স্থানে যানজট হচ্ছে। যানজটের কারণে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে যানজটের কারণে এক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে অনেক সময় সাত–আট ঘণ্টা লেগে যায়। ঈদযাত্রায় এ অংশে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া এলাকায় চার লেনের সংস্কারকাজের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সংস্কারকাজ চলাকালীন চার লেনের যানবাহনগুলো দুই লেনে চলাচল করে। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স, যাত্রীবাহী যানবাহন ও ভিআইপিদের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ম লঙ্ঘন করে চলাচল করে। এতে মহাসড়কের ওই অংশে যানজট সৃষ্টি হয়। অনেক সময় সংস্কার এলাকার কয়েক কিলোমিটারে সৃষ্টি হওয়া যানজট ধীরে ধীরে ঢাকার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকা পর্যন্ত পৌঁছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার মহাসড়কের এক বছর মেয়াদি চার লেনের পরীক্ষামূলক সংস্কারকাজ গত বছরের নভেম্বর মাসে চান্দিনা উপজেলার কাঠেরপুল এলাকা থেকে শুরু হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে সংস্কারকাজটি পুরোদমে চালু হয়। তিনি আরও বলেন, বিটুমিন ও পাথর ভারত থেকে হিলি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থলবন্দর দিয়ে আনার কারণে মাঝেমধ্যে সংকট দেখা দেয়। তখন সংস্কারকাজ বন্ধ রাখতে হয়। তা ছাড়া বৃষ্টি ও অতিরিক্ত রোদের কারণেও মাঝেমধ্যে সংস্কারকাজ বন্ধ রাখতে হয়। তবে ঘোষণা না দিলেও যানজট এড়াতে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই স্বাভাবিকভাবে সংস্কারকাজ বন্ধ রাখতে হবে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা–পুলিশের এসআই সুলতান আহমেদ বলেন, মহাসড়কের সংস্কারকাজের সময় প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার দিকে চার লেনের যানবাহনগুলো দুই লেনে চলাচল করে। তখন কিছু চালক নিয়ম ভেঙে আগে যাওয়ার চেষ্টা করলে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।
দাউদকান্দির গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল আবেদীন বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় গৌরীপুর থেকে সে মা–বাবার সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকায় রওনা দেয়। মহাসড়কের সংস্কারকাজের কারণে দাউদকান্দি টোলপ্লাজা এলাকায় যানজটে আটকা পড়ে সে। পরে সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকায় পৌঁছে। অথচ যানজট না থাকলে ৫০ মিনিটেই ঢাকায় পৌঁছা সম্ভব।
দাউদকান্দির বেগম রাবেয়া মহিলা কলেজের শিক্ষক ফজলুল হক, শামীম আরা বেগম, নিহাত জামান, ফরিদা ইয়াছমিন, শাহজাহান মজুমদার, ইকবাল হোসেন ও লিটন কুমার পোদ্দার বলেন, তাঁরা নিয়মিত ঢাকা থেকে কলেজে আসা–যাওয়া করেন। কিছু দিন ধরে যানজটে পড়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজার, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, বুড়িচং উপজেলার নিমসার তরকারি বাজার, আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা, কুমিল্লা নগরের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার ও চৌদ্দগ্রাম বাজারের কারণে যানজট হয়। এসব এলাকায় মহাসড়কের ওপর বাজার বসার কারণে গাড়ি নিয়ে পথ চলতে বেগ পেতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাজার এলাকায় তিন চাকার বাহনসহ অন্য বাহন মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পণ্যবাহী বাহনও থেমে থাকে।
কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী তিশা পরিবহনের চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজার এলাকায় গাড়ি চালাতে বেগ পেতে হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, মহাসড়ক ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের ক্রটি নেই। মহাসড়কের যেসব স্থানে বাজার আছে, সেসব স্থানে যান চলাচলে একটু সমস্যা হয়। মহাসড়কের কোথাও কোনো ধরনের খানাখন্দ নেই।
সূত্র: প্রথম আলো