শিরোনাম
আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। তাই সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি বেড়েছে। আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে উপজেলা পর্যায়েও যানজট হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বুধবার (৬ এপ্রিল) সংসদে রাজধানীর যানজট নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
সংসদে জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল-২০২২ এর ওপর আলোচনায় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ঢাকা আজকে নিশ্চল নগরীতে পরিণত হয়েছে। টানা ১৫ বছর আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায়, কিন্তু ঢাকা শহরের একটা ভয়াবহ দুরবস্থা।
তিনি বলেন, শব্দদূষণ বলেন, বায়ুদূষণ বলেন, পানিদূষণ বলেন, মশার উপদ্রব বলেন, কিংবা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সাংঘাতিক বিপর্যয় বলেন। অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ঢাকা শুধু নয়, গোটা বাংলাদেশ একটি বসবাস অযোগ্য দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।
এমপি হারুন বলেন, সরকার শুধু মেগা প্রকল্পের দিকে দৃষ্টিপাত করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যারা দেখতে পায় না, চোখে চশমা দিতে।’ আমরা চোখে চশমা দিচ্ছি। আজ বাসা থেকে সচিবালয় যেতে তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। রোজাদাররা অফিস থেকে বাসায় এসে ইফতার করতে পারছেন না। মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গেলে মশার উপদ্রবে নামাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। এগুলো বাস্তব চিত্র। এই জায়গাগুলোতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন?
তিনি বলেন, আমরা কিছু বললে আপনারা বলেন- বিএনপির আমলে কী হয়েছে? আরে বিএনপি তো ২০ বছর আগে ক্ষমতায় ছিল। আপনারা টানা ১৫ বছর ক্ষমতায়। আপনাদের পরিকল্পনা কী? আজ ঢাকা নগরী যে বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দদূষণ, বায়ুদূষণে আপনারা বিএনপির চেয়ে উন্নতি করছেন? না কি বিএনপির চেয়েও অবনতি ঘটেছে। এই জায়গাগুলো বলেন। যদি সুসংবাদ দিতে পারেন।
মেট্রোরেল বাস্তবায়নে ঢাকা মহানগরীর যানজট দূর করা যাবে না দাবি করে বিএনপির এ সংসদ সদস্য বলেন, গণপরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন আনতে হবে।
এর জবাব দিতে গিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। তাই সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি বেড়েছে। আগামীতে আওয়ামী লীগ যদি আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকে, তাহলে উপজেলায়ও দেখবেন গাড়ির লাইন লেগে যাবে। হারুন সাহেবকে বলি আল্লাহ যদি বাঁচিয়ে রাখেন, আওয়ামী লীগ আরেকটা মেয়াদ ক্ষমতায় থাকে, তাহলে আপনি দেখবেন যে, উপজেলায় ট্রাফিক জ্যাম হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আপনি (হারুনুর রশিদ) বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণের কথা বলছেন। আমার মতিঝিলে অফিস ছিল। গুলশানে আসতাম, ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগতো। এখন আমার অনেক বেশি সময় লাগে। কেন লাগে? কারণ আমাদের আয় অনেক বাড়ছে। ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশ থেকে দুই হাজার ৫৯১ ডলার মাথাপিছু আয় এখন। এখন সবাই গাড়ি কিনছেন।
‘ঢাকা শহরের কথা বলছেন, এখানে মানুষ যেভাবে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে, সবাই ঢাকায় মুভ করছে। সারা পৃথিবীতেই এমন হয়েছে। লন্ডন, টোকিও, কলকাতায়ও হয়েছে। তারা এটাকে ম্যানেজ করেছে। আমরাও এটা নিয়ে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাকে ড্যাপের সভাপতি বানিয়েছেন, সেখানে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় বাড়ার কারণে মাথাপিছু কনজামশান বাড়ছে, মাথাপিছু ওয়েস্ট বাড়ছে। ঢাকা শহরের বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন নিয়মিত রাস্তাগুলো পরিষ্কার করছে। সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্জ্য সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে- যোগ করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
সূত্র: জাগো নিউজ