শিরোনাম
শুক্রবার (২৫ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ১২ দেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নাইজেরিয়ার হাইকমিশনার আহমেদ সুলে, মাল্টার রুবেন গাউসি, এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত ক্যাট্রিন কিভি, আয়ারল্যান্ডের ব্রেন্ডন ওয়ার্ড, রুয়ান্ডার মুকাঙ্গিরা জ্যাকলিন, রোমানিয়ার ড্যানিয়েলা মারিয়ানা সেজোনভ, ডোমিনিকান রিপাবলিকের ডেভিড ইমানুয়েল পুইগ বুচেল, কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের আসউইন ইসায়েভ, ফিনল্যান্ডের রিতভা কাউকু-রোন্ডে, সিয়েরা লিওনের রশিদ সেসে, হাঙ্গেরির আন্দ্রাস লাসজলো কিরালি ও কলম্বিয়ার মারিয়ানা পাচেকো মন্টেস।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে রয়েছি এবং বিশ্বজুড়ে শান্তির সংস্কৃতি প্রচলনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছি। শান্তি এবং মানবিকতার জন্য আমরা মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে মহানুভবতা দেখিয়েছি।
এক্ষেত্রে মিয়ানমারের নাগরিকরা যেন নিরাপদে ফিরতে পারে সে জন্য দেশটির ওপর চাপপ্রয়োগ অব্যাহত রাখতে— নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের স্ব-স্ব দেশের অবস্থান দৃঢ় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নবনিযুক্ত দূতরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করবেন বলে ড. মোমেন আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে এ দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা বরাবরের মতো অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন ড. মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত একদশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্যের হার কমানো, শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ, গড় আয়ু ৭৪-এ উন্নীত, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা তুলে ধরেন। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে এসব অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে এসব প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের অংশ নেওয়ার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, আমাদের দেশে বিনিয়োগের ওপর রিটার্ন এ অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিনিয়োগবান্ধব এবং সরকার বিনিয়োগে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
বিশেষ করে পর্যাপ্ত ও সহজলভ্য শ্রমশক্তি, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি, স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ, পর্যাপ্ত পানি সরবরাহসহ সব উপাদান বিদ্যমান উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, আমাদের নিজেদের বৃহৎ বাজার রয়েছে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও আমাদের অত্যন্ত কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতার জন্যেও তাদের স্ব স্ব দেশ থেকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
হাঙ্গেরি সরকারের শিগগির বাংলাদেশে দূতাবাস চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যান্য অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদেরও তিনি বাংলাদেশে তাদের মিশন কিংবা কনস্যুলেট প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। রোমানিয়া, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওনসহ অন্য কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি নিজ নিজ দেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। তারা বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও জনসাধারণের কল্যাণে সবসময় পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
এ সময় অনাবাসিক দূতদের বাংলাদেশে তাদের দায়িত্বপালনে সাফল্য কামনা ও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সূত্র: জাগো নিউজ