শিরোনাম
করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নিয়মিত বৈঠক শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকসহ মোট পাচঁটি বৈঠক হবে।
এরমধ্যে প্রথম বৈঠকটি হবে ২০ মার্চ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে। কোভিড পরিস্থিতি, র্যাবের ওপরে নিষেধাজ্ঞা ও সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে হতে যাওয়া বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের মধ্যে থাকবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি ও নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে এটি সপ্তম বৈঠক এবং এর আগের বৈঠকটি ২০১৯ সালে হয়েছিল। গতবার যে ফরম্যাটে আলোচনা হয়েছিল, এবার তার থেকে কিছুটা ভিন্ন হবে এবং বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তিনি বলেন, এবারে রাজনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক, মানবাধিকার পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।
রাজনৈতিক সম্পর্ক
দুই দেশের মধ্যে অনেক বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে কোনও সফর হয়নি। এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটি জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া দুই দেশের মাঝে আরও যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেবে ঢাকা।
সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, শীর্ষ পর্যায়ের সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও অনেক মজবুত ও দৃঢ় করে। আমরা যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি সফরের ওপর জোর দেবো। এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুটি আমরা সবসময় আলোচনা করি এবং এবারও করা হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি উত্থাপিত হলে বাংলাদেশ তার অবস্থান পরিষ্কার করবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বেশিরভাগ জ্বালানি খাতে। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বহুমুখীকরণ চায় ঢাকা। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র দফতরের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে। এ কারণে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ছে। এছাড়া ১৬ কোটি মানুষের দেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে।
আগামী ১১ মে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিজনেস কাউন্সিলের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করবে। আশা করা হচ্ছে, ওই সময় ব্যবসায়িক যোগাযোগ আরও বাড়বে বলে তিনি জানান।
মানবাধিকার পরিস্থিতি
আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, শ্রম অধিকার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সবসময় আলোচনা হয়। একজন কর্মকর্তা বলেন, আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম নিয়ে আমাদের বক্তব্য বিভিন্ন দেশসহ জাতিসংঘকে দিয়েছি। সেটি আবারও তাদের জানানো হবে।
মানবপাচার রোধে বাংলাদেশের যে সাফল্য সেটিও বৈঠকে তুলে ধরা হবে বলে তিনি জানান।
নিরাপত্তা সহযোগিতা
দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সংলাপটি আগামী ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এ বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা হবে। অংশীদার সংলাপেও এটি নিয়ে কথা হবে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, দুটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। এরমধ্যে তথ্য সংক্রান্ত চুক্তিটি হচ্ছে জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং লজিস্টিক বিষয় নিয়ে চুক্তিটি হচ্ছে আকসা (অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট)। এছাড়া সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়েও আলোচনা হবে বলে তিনি জানান।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন