শিরোনাম
আমাদেরকে দক্ষ ও যোগ্য মানুষ গড়ে তুলতে হবে। সেইসঙ্গে দক্ষতার শিক্ষা অর্জন করতে হবে। প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার প্রতি জোর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
গতকাল বুধবার (০৯ মার্চ) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সক্রেটিসের যুগে এক ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মূল্যবোধ তৈরি। রেনেসাঁস যুগের মানুষের শিক্ষাব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষতা ও যোগ্যতা তৈরি করা। বর্তমান যুগে আমাদের দুই উদ্দেশ্য পূরণ করতে হবে।
পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম লিডার অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, এই ইন্টারনেট-মোবাইলের যুগে মানুষকে বইমুখী করা অনেক কষ্টসাধ্য। আমরা সেই কাজটাই করে যাচ্ছি। ইউরোপেও মোবাইল-ইন্টারনেট আছে কিন্তু সেখানে শিশুরা এভাবে আসক্ত হয়নি। সেখানে শৈশবেই আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হয়, বই পড়ার আনন্দ সেখানে রয়েছে।
প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার প্রতি জোর দেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা প্রত্যেকটি স্কুলে লাইব্রেরি করে দেব। পরবর্তীকালে যদি কর্মসূচি চালু নাও থাকে, তবু যেন শিক্ষার্থীরা বই পড়তে পারে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক, বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) এবং ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর (এসইডিপি) বেলায়েত হোসেন তালুকদার, মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মামুনুল আলম।
প্রধান অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক অনলাইনে যুক্ত হয়ে বলেন, এই কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে শিক্ষাব্যবস্থায় একটি নতুন ধারা তৈরি হবে। তিনি এই কর্মসূচিকে বর্তমান সময়ের একটি সাহসী প্রয়াস উল্লেখ করে বলেন, কর্মসূচির পাঠক সংখ্যা অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।
তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠাগারের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কো-টিম লিডার শামীম আল মামুন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এসইডিপির মধ্যে দুই বছরের (২৪ মাস) একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী দেশের ৬৪ জেলার ৩০০ উপজেলার ১৫ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। এর আওতায় প্রথম বছর প্রায় ২৫ লাখ এবং দ্বিতীয় বছরেও প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরি থেকে পাঠ্যবই বহির্ভূত সৃজনশীল বই পড়ার সুযোগ পাবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশ অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, গ্রন্থাগারিক/সংগঠক, শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকসহ সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।