আজ সংযুক্ত আরব আমিরাত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী 

ফানাম নিউজ
  ০৭ মার্চ ২০২২, ০৭:৪৩
আপডেট  : ০৭ মার্চ ২০২২, ০৭:৪৭

এবার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার বিকাল ৪টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবুধাবির উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন তিনি। 

জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক মহামহিম মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ‘এক্সপো’তে অয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন তিনি। এছাড়া সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো, বিমান ও সামুদ্রিক সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন করা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে। স্বাক্ষর হতে পারে ৪-৫টি সমঝোতা স্মারক। ছয় দিনের সফর শেষে ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর উপলক্ষ্যে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, এই ‘এক্সপো’ (ঊীঢ়ড়) ইভেন্ট সারা বিশ্বে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরার একটি মোক্ষম প্ল্যাটফরম। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা এবং বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নসহ অর্থনৈতিক খাতে আমাদের অর্জনগুলোকে তুলে ধরতে এই সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের একটি বড় শ্রমবাজার হলো মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে এই একটি দেশ থেকেই বাংলাদেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, তা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

তিনি বলেন, করোনার মাঝে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সংযুক্ত আরব আমিরাত আমাদের জন্য তাদের শ্রমবাজার আংশিক খুলে দিয়েছে, যা একটি কূটনৈতিক সাফল্য। গত অর্থবছর করোনার সময়ে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমাদের মোট আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। তবে বাণিজ্য ঘাটতি এখনো দেড় বিলিয়ন ডলারের মতো। এর মূল কারণ আমরা তাদের থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকি। আমাদের রপ্তানির পরিমাণ সে দেশে আরও বাড়ানোর গুরুত্ব পাবে এই সফরে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক আরও জোরালো করতে দুদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘জয়েন্ট বিজনেস ফোরাম’-এর আয়োজন করা হবে, যা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য খুবই লাভজনক হবে বলে মনে করি।

ড. মোমেন বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতির মাতা শেখ ফাতিমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করবেন, যা একটি দুর্লভ সুযোগ। এছাড়াও তিনি দুবাই এক্সপোতে বাংলাদেশ পেভিলিয়ন ঘুরে দেখবেন। এছাড়া রাস আল খাইমাতে বাংলাদেশি কমিউনিটি স্কুল ‘বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল’-এর নতুন ক্যাম্পাসে নির্মিতব্য ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস এবং এই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইউক্রেনে বন্দি ৫ বাংলাদেশি, ফেরানোর আশ্বাস : ‘অবৈধভাবে’ ইউক্রেনে প্রবেশ করে বন্দি পাঁচ বাংলাদেশির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ মিশন তাদের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করছে। যতদূর জানা যায়, তারা রাশিয়ায় খেলা (২০১৮ এর ফুটবল বিশ্বকাপ) দেখতে গিয়েছিলেন। খেলার জন্য গিয়ে ইউক্রেনে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো, এরা অন্য কোনো দেশে যাবে। সেখানে যাওয়ার পরে তারা ইলিগ্যাল থাকায় তাদেরকে ইউক্রেন সরকার অ্যারেস্ট করে, অ্যারেস্ট করে তারা ডিটেনশন সেন্টারে রেখে দিয়েছে। আমরা আরও (তথ্য) পাওয়ার চেষ্টা করছি।

হাদিসুরের লাশ দেশে আসতে কিছু সময় লাগবে : গোলার আঘাতে বাংলার সমৃদ্ধির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের লাশ ইউক্রেন থেকে আসতে আরও কিছু সময় লাগবে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকে ২৮ নাবিককে রোমানিয়ায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু বিমান হামলায় নিহত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের লাশ এখনই ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। লাশ বর্তমানে ইউক্রেনে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছে। পরে তার লাশ দেশে আনা হবে।

কেন ভোটদানে বিরত বাংলাদেশ : সাধারণ পরিষদের খসড়া প্রস্তাবে বাংলাদেশ কেন ভোটদানে বিরত ছিল-এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খসড়া প্রস্তাবটি পড়লে দেখবেন এটা যুদ্ধ বন্ধের জন্য নয়। কাউকে দোষারোপের জন্য এটি। আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই না, কোথাও যুদ্ধ হোক। এজন্য আমরা জাতিসংঘে বলেছি, যে দুর্ঘটনা হচ্ছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সব দেশ জাতিসংঘের সনদ মেনে চলবে, এমন প্রত্যাশা করে আব্দুল মোমেন বলেন, এই সনদ অনুসরণ করে আমাদের অগ্রসর হওয়া উচিত। বাংলাদেশ সব সময় আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে।

সূত্র: যুগান্তর