শিরোনাম
দুপুর সাড়ে ১২টা। টিসিবির ট্রাক এসেছে রাজধানীর মৌচাক মোড়ে। ট্রাক দেখতেই ছুটোছুটি। এই ছুটোছুটি লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে। একটু খাবারের জন্য। বাজারে নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামের কারণে নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকজন এখন টিসিবির পণ্যের অপেক্ষায় থাকেন।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর যখন টিসিবির ট্রাক আসে তখন শুরু হয় শত শত মানুষে হুড়াহুড়ি। অনেকে আবার লোকলজ্জার কারণে লাইনে দাঁড়াতে না পারলেও কাউকে লাইনে দাঁড় করিয়ে পণ্য কেনেন। ফলে যেখানে টিসিবির ট্রাক দেখেন সেখানেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে মানুষ।
মৌচাকে অবস্থান করে দেখা যায়, লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। বিশেষ করে সমস্যায় পড়েন নারীরা। কাউকে কাউকে লাইন ছেড়ে যেতেও দেখা যায়।
সেখানে থাকা মর্জিনা বানু জানান, সকাল ৮টা থেকে অপেক্ষা করতে থাকে মানুষ। কিন্তু টিসিবির ট্রাক আসে দেরিতে।
টিসিবির ডিলার মিন্টু এন্টারপ্রাইজের বিক্রয়কর্মী সফিকুজ্জামান বলেন, বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়ায় আসতে দেরি হয়েছে। এর মধ্যে শত শত লোক ভিড় করেছে। এখন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পরিস্থিতি।
আবুল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, সকাল থেকে কয়েক দফা মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু গাড়ি দেরিতে আসায় সেগুলো ভেঙে অনেক নতুন লাইন তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। বাধ্য হয়ে এ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে দরিদ্র মানুষ। এছাড়া তাদের কোনো বিকল্প নেই। তাই পণ্য পাওয়ার জন্য যেন যুদ্ধে নেমেছে তারা।
এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চলতি অর্থবছর অষ্টম দফায় সাশ্রয়ীমূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এ দফায় শনিবার কার্যক্রমের শেষ দিন। আগামী মাসে আবার নবম দফায় কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে মৌচাকে যখন টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়, তখন পাশে শান্তিনগর বাজারের টিসিবির বিক্রি শেষ।
সেখানে ডিলার এহসান ইন্টারপ্রাইজের বিক্রয়কর্মী জাহিদ হোসেন বলেন, ঠিক ১০টার সময় স্পটে (শান্তিনগর) এসেছি। এতো মানুষ যে, আড়াই ঘণ্টার মধ্যে পণ্য শেষ। আগে থেকেই কয়েকশো মানুষ পণ্যের জন্য লাইন ধরেছিল।
এদিকে এ দফায় চাহিদা বিবেচনায় পণ্য বিক্রির মেয়াদ চারদিন বাড়ানো হয়েছিল। চারদিন বেড়ে আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ছিল শেষ দিন।
টিসিবির এই কার্যক্রমে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ বিক্রি হয়। এখানে চিনি প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, মসুর ডাল প্রতি কেজি ৬৫ টাকা, সয়াবিন প্রতি লিটার ১১০ টাকা এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। একজন দুই কেজি করে পণ্য এবং দুই লিটার তেল নিতে পারছেন।
রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ৪৫০টি ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি হয়।
সূত্র: জাগো নিউজ