শিরোনাম
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ বোধ হয় চলেই এলো! এই মুহূর্তে সবাইকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এক্ষেত্রে কাপড়ের মাস্কের পরিবর্তে এন-৯৫ ও এফএফপি-২ মাস্ক ডেল্টা ও ওমিক্রনের মতো সর্বাধিক সংক্রমণযোগ্য করোনা ভেরিয়েন্ট প্রতিরোধ করতে পারবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এ ছাড়াও বিশেষজ্ঞরা এমন মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন, যা নাক, মুখ ও থুতনির নীচ পর্যন্ত অংশ ভালোভাবে ঢেকে রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের মতে, সার্জিকাল মাস্কের পরিবর্তে ভালো ফিটিংয়ে এফএফপি-২ মাস্ক অধিক সুরক্ষা প্রদান করে। আবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেখে তারা একটির পরিবর্তে দুটি মাস্ক পরারও পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিশেষত স্বাস্থ্যকর্মীদের দুটি মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ করোনা আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি আছে স্বাস্থ্যকর্মীদের, তাই তাদের এন-৯৫ মাস্ক পরা উচিত। আবার সার্জিকাল মাস্ক ও কাপড়ের মাস্কও কাজে দেবে।
সঠিকভাবে মাস্ক পরার সঠিক পদ্ধতি
সঠিক মাস্ক নির্বাচনের পাশাপাশি ভাইরাস থেকে সর্বাধিক নিরাপত্তা পেতে মাস্কগুলো সঠিকভাবে পরতেও হবে। তাই মাস্কটি মুখে যাতে ফিটিং হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। কোনো দিকে যেন ফাঁকা না থাকে, তাও নিশ্চিত করুন।
ডাবল মাস্ক ব্যবহার করলে, সেটি ভাইরাস থেকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা প্রদান করবে। ফেস মাস্কগুলো ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা প্রদান না করলেও এর সঠিক ব্যবহার করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিরক্ষা কবচ গড়ে তুলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মাস্ক থুতনির নীচে পর্যন্ত গিয়ে নাক ও মুখ ভালো ভাবে চেপে রাখুন। এ ছাড়াও মাস্কের বাইরের কোনো অংশ স্পর্শ করবেন না। বাইরে থাকলে মুখে কোথাও হাত দেবেন না।
এক্ষেত্রে যা মনে রাখবেন-
>> মাস্ক পরা ও খোলার সময় মাস্কের দড়ি ব্যবহার করুন।
>> প্রতিবার মাস্ক ব্যবহারের পর কাপড় ধুয়ে রাখুন।
>>ব্যবহারের পর সার্জিকাল মাস্ক ফেলে দিন।
>> এন-৯৫ মাস্ক ও সার্জিকাল মাস্ক ফেলে দেওয়ার আগে নষ্ট করে দিন, যাতে কেউ এটি আবার ব্যবহার করতে না পারে।
>> মাস্কের ওপর কখনো স্যানিটাইজ করবেন না।
>> অন্যের সঙ্গে মাস্ক এক্সচেঞ্জ করবেন না।
>> নিজের মাস্ক আলাদা রাখুন। অন্যের সঙ্গে মিশিয়ে রাখবেন না।
প্রথমে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে সঠিক ফিটিংযুক্ত মাস্ক নির্বাচন করুন। নির্বাচিত মাস্কটিতে কোনও খুঁত আছে কিনা যাচাই করে নিন। ক্লিপ দেওয়া মাস্ক থাকলে, সেটি নাকের ওপর ভালোভাবে সেট করে নিন, যাতে বায়ু প্রবেশ করতে না-পারে।
মাস্ক পরার পর লিক টেস্ট করে দেখতে পারেন। এক্ষেত্রে মাস্ক পরে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। লিক থাকলে হাওয়া বেরোবে, তখন যাচাই করে দেখে নিন কোথায় লিক রয়েছে।
কথাবলার সময় এখন অনেকেই মাস্ক নামিয়ে নেন। এ ক্ষেত্রেও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারও সঙ্গে কথা বলার সময় ভুলেও মাস্ক নামিয়ে নেবেন না। আবার হাত স্যানিটাইজ না করে মাস্ক ধরবেন না।
বাচ্চাদের জন্য সঠিক মাস্ক কোনটি
যে বাচ্চারা স্বাভাবিকভাবে সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন, তারা নন মেডিক্যাল বা ফ্যাব্রিকের মাস্ক পরতে পারে। উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত হলে, এ ধরনের মাস্ক পরার ফলে তাদের শরীর থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। তবে অন্যরা ভালো গুণমান সম্পন্ন মাস্ক ব্যবহার করবেন।
>> খেয়াল রাখবেন শিশুদের মাস্কটি যেন সঠিক সাইজের হয়।
>> মাস্কটি যাতে বাচ্চার নাক, মুখ ও থুতনির নীচ পর্যন্ত ঢেকে রাখে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
>> যেসব শিশুরা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ক্যানসার বা ইমিউনোসাপ্রেশানে ভুগছে, তারা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন ও মেডিকেল মাস্ক পরুন।
এ ধরনের মেডিকেল মাস্কগুলো ব্যবহারে ভাইরাস ছড়াবে না। যে ব্যক্তিরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাদেরকেও এ ধরনের মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সূত্র: বিবিসি/ইউনিসেফ