শিরোনাম
প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল ত্বক। কেননা প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল ত্বক মানুষের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পরিবেশের দূষণ এবং স্ট্রেস আপনার একসময়ের উজ্জ্বল এবং সুস্থ ত্বককে নিস্তেজ ও প্রাণহীন করে তোলে। যার ফলে বয়সের ছাপ পরে আমাদের চেহারায়।
তবে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বেশ কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি আছে। যা ব্যবহারে আপনার ত্বকের অতি-কাঙ্ক্ষিত আভা ধরে রাখতে পারবেন। কেননা পুনরুজ্জীবিত ত্বক আমাদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস প্রদান করে স্ট্রেস কমিয়ে দেয়। তাহলে চলুন জেনে নেই ঘরোয়া উপায়ে ত্বককে উজ্জ্বল করে, ত্বকের যৌবন ধরে রাখার উপায়।
এপ্রিকট
এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ই রয়েছে। যা আপনার ত্বকের জন্য উপকারী। বিশেষ করে ভিটামিন সি ফ্রি যা ডিকেলগুলিকে নিরপেক্ষ করে ইউভি (UV) রশ্নি এবং দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করে। চার থেকে পাঁচটি এপ্রিকট ফুলে উঠা না পর্যন্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর এপ্রিকটগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে তার সাথে ২ চা চামচ মধু, ১/২ চা চামচ বাদাম তেল এবং ১/২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর মিশ্রণটি পুরো মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
পেঁপে ও মধু
২ চামচ পেঁপের পেস্টের সঙ্গে ২ চামচ মধুর রস মিশিয়ে বৃত্তাকার গতিতে আপনার ত্বকে লাগান। এরপর ১৫ মিনিট এভাবেই মুখে লাগিয়ে রাখুন। পেঁপে ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকে পুষ্টি যোগায়।
কমলার খোসা
কমলার খোসা কুঁচি করে রোদে শুকিয়ে নিন। ১ চামচ শুকনো কমলার খোসার সঙ্গে ২ চামচ বেসন এবং ১ চামচ দুধ যোগ করে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে। যা আপনার ত্বককে টানটান রাখে এবং ফটোজিং ও হাইপারপিগমেন্টেশন এর উপস্থিতি হ্রাস করে।
তরমুজ এবং শসার প্যাক
তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিনের উপস্থিতি। এটি বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখা সহ বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। গ্রেট করা শসা, গ্রেট করা তরমুজ এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগান। এরপর শুকিয়ে গেলে তেলমুক্ত, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
পেঁপে এবং কলা
কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে এবং অর্ধেক পাকা কলা নিন। দুটি ফল একসঙ্গে ব্লেড করে ঘন পেস্ট তৈরি করে ত্বকের যে অংশে বলিরেখা রয়েছে সেখানে প্যাকটি লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। পেঁপের মধ্যে প্যাপাইন নামক এনজাইম রয়েছে, অন্যদিকে কলার মধ্যে রয়েছে নানা ভিটামিন যা ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। ন্যাচরাল এই ফেসপ্যাকটি বলিরেখা মুক্ত করতে এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে দারুণ উপকারী। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
টমেটো
৩ টেবিল চামচ টমেটোর রসের সাথে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, ২ টেবিল চামচ দুধের ক্রিম যোগ করে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। ১৫ মিনিট রাখুন এরপর ধুয়ে ফেলুন। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন যা ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে এবং টানটান করে। এতে অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা আপনার ত্বককে সতেজ রাখে।
ওটমিল এক্সফোলিয়েটিং
একটি সমীক্ষা অনুসারে, ওটমিল প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ যা ত্বকের শুষ্কতা, স্কেলিং এবং রুক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এমনকি এটি চুলকানিও কমাতে পারে। ১ টেবিল চামচ ওটমিল সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তার সাথে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ওটমিলে উপস্থিত স্যাপোনিনগুলি আপনার ত্বককে পরিষ্কার করে সজীবতা ফিরিয়ে আনবে।
ডিমের সাদা অংশ
অ্যান্টি রিঙ্কলস ক্রিমের বদলে সপ্তাহে এক-দু'বার মুখে ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের বলিরেখা এবং ফাইনলাইনস দূর হবে। ত্বক হয়ে উঠবে টানটান। ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফেটিয়ে নিন এবং ত্বকের উপর লাগিয়ে রাখুন। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
দই
ঘরে তৈরি দই আপনার ত্বকের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। এতে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড এক্সফোলিয়েটর এবং ত্বক উজ্জ্বল করার মতো কাজ করে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, দইয়ের প্যাক আর্দ্রতা, উজ্জ্বলতা এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। ২ চা চামচ দই, ১/৪ চা চামচ হলুদ গুড়া এবং ১/২ চা চামচ বেসন মিশিয়ে একটি মসৃণ ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এরপর মুখ পরিষ্কার করে প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বক পরিষ্কার এবং টানটান করে। এতে আপনার ত্বক তরুণ এবং সতেজ দেখায়।
সূত্র: আরটিভি