শিরোনাম
দেশে ডায়রিয়ার সংক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মহাখালীর কলেরা হাসপাতালে (আইসিডিডিআর-বি) দৈনিক চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২২ মার্চ। সেদিন ৬০ বছরের ইতিহাসে এক দিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৭২ জন ভর্তি হয়েছিলেন, যা ঘণ্টা হিসাবে ৫৩ জন।
গত ২৮ মার্চ সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫৬ জন করে মোট ১ হাজার ৩৩৪ রোগী ভর্তি হয়। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুর ২টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৭৬৯ জন।
চিকিৎসকরা মনে করছেন তিন কারণে এ সময়ে ডায়রিয়া বাড়ছে। এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, প্রতি বছরই গরমের সময় ডায়রিয়া বাড়ে। গত দুই বছর করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ ছিল। রাস্তার পাশে দোকানপাট ও খাবার কম ছিল। এ বছর গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই খোলা। গরমও বেশি পড়েছে। মানুষ রাস্তার আশপাশে পানি খাচ্ছে। এখন রাতের খাবার রেখে দিলে পরদিন সকালে খাওয়া যায় না। এখন ডায়রিয়ার দুটি মূল কারণ- একটি হলো দূষিত পানি, আরেকটি বাসি খাবার বা রাস্তার আশপাশের খাবার। আমরা বাইরে শরবত খাচ্ছি। কিন্তু কী শরবত খাচ্ছি ও কী পানি দিয়ে তৈরি হচ্ছে, সেগুলো জানছি না।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরই ডায়রিয়া বাড়ে। কিন্তু এ বছর তুলনামূলক বেশি। আমাদের দেশে সাধারণত এপ্রিলের দিকে গরম শুরু হলে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এ বছর আগেই গরম পড়তে শুরু করেছে, ডায়রিয়াও একটু আগেই শুরু হয়ে গেছে। এবার ডায়রিয়া ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে।
কলেরা হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম মনে করেন, সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া খোলা খাবার, শরবত। মাছ সংরক্ষণের জন্য যে বরফ, সেই বরফ দিয়ে ওরা শরবত বানায়। এই বরফ সাধারণ পানি দিয়ে হয়, ফুটানো পানির দরকার নেই। সেই বরফ জুস শরবতে ব্যবহার করছে। এটা খুবই বিপজ্জনক।
ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ডায়রিয়ার উপসর্গ হলো পাতলা পায়খানা হবে, বমি হতে পারে। পেটে এক ধরনের ব্যথা হয়। সাধারণ সময়ের চেয়ে যদি বেশিবার পায়খানা হয়, তাহলে বুঝতে হবে ডায়রিয়ার উপসর্গ। এমন হলে সাথে সাথে বাজারে যে ওরস্যালাইন পাওয়া যায়, সেটা খাবে। স্যালাইনও বেশি খাওয়া যাবে না। প্যাকেটের গায়ে যেভাবে প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে, সেভাবেই প্রস্তুত করবে ও খাবে। সেটাও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি করতে হবে।
মেনে চলুন তিন পরামর্শ
ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ডা. বাহারুল আলম বলেন, পানি ফুটিয়ে খেতে হবে। পানি বলগ ওঠার পর ৪-৫ মিনিট ফুটাতে হবে, এরপর ঠাণ্ডা করে খেতে হবে, রাস্তার খাবার বর্জন করতে হবে, আর হাত ধুতে হবে। অবশ্যই খাওয়ার আগে ও টয়লেট থেকে আসার পরে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে। এই তিনটি মানতেই হবে।
সূত্র: ডক্টর টিভি