খেলোয়াড় থেকে মাদক জগতে!

ফানাম নিউজ
  ০২ অক্টোবর ২০২১, ১৯:০৪

ছিলেন খেলোয়াড়। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে কুষ্টিয়া জেলায় সেরা হয়ে অংশগ্রহণ করেন বিভাগীয় পর্যায়ে। দৌড়ে খুলনা বিভাগেও সবাইকে ছাড়িয়ে যান চুয়াডাঙ্গার ছেলে মোহাম্মদ হাসান। এরপর ঢাকায় গিয়ে ট্রায়াল দিলেও জাতীয় দলে সুযোগ পাননি তিনি। সূত্র: আরটিভি

তবে স্প্রিন্টে না পারলেও হ্যান্ডবলে জাতীয় যুবদলে ঠিকই জায়গা করে নেন তিনি। খেলেন বেশকিছু ম্যাচও। ক্রীড়ায় যার এমন উজ্জ্বল পথচলা সেই তিনিই কিনা হারিয়ে গেলেন মাদকের অন্ধকার জগতে! আরও তিন সহযোগীসহ জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলের সাবেক এই খেলোয়াড়কে গ্রেপ্তার করেছে চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ।

শুক্রবার রাত থেকে আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪৯ টি প্যাথেড্রিন, নগদ টাকা ৪ হাজার ৪০০ টাকা ও একটি দেশিয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বড় মসজিদপাড়ার মৃত মওলা বক্সের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক বনি (৩৩), একই পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আসলাম হোসেন (৪৭), মৃত আজিজুল হকের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (৪৯) ও জোয়ার্দার পাড়ার মতলেব মিয়ার ছেলে তোতা মিয়া (৪৭)।

পুলিশ জানিয়েছেন, মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার (০১ অক্টোবর) রাত থেকে ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শীর্ষ মাদক কারবারি আবু বক্কর সিদ্দিক বনি ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে হাসানও রয়েছেন।

পুলিশ  আরও জানিয়েছেন, বনি চুয়াডাঙ্গায় মাদকের নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাকে এর আগেও একাধিকবার গ্রেপ্তারের অভিযান চালালেও সে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মসজিদ পাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর হাসানের তথ্য জানা যায়। হাসানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, ১৯৮৭ সালে তিনি জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলে খেলেন। ১৯৮৯ পর্যন্ত তিনি এই দলে খেলেন। পরে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান। সেখানে সুবিধা করতে না পারায় দেশে ফেরেন ২০১৭ সালে। দেশে একটি মুদির দোকান দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায় অল্প দিনেই। এরপর বন্ধুদের সাথে মাদকের জগতে পা বাড়ান হাসান। প্রথমে শুধু সেবন করলেও পরে নিজেও বিক্রিতে নেমে পড়েন। যোগ দেন বনির দলে। ২০১৮ সালে একবার গ্রেপ্তারও হন তিনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন  আরও বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক বনি জেলার শীর্ষ মাদক কারবারি। সদর থানায় তার বিরুদ্ধে ৬ টি মামলা রয়েছে। এছাড়া হাসানের বিরুদ্ধে ৬টি, আসলামের বিরুদ্ধে ৪টি, তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। তাদের শনিবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।