শিরোনাম
ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও কংগ্রেসশাসিত পাঞ্জাবে বিধানসভার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল রোববার। উত্তর প্রদেশে তৃতীয় দফায় ১৬ জেলায় ভোট দিয়েছেন মানুষ। পাঞ্জাবে ভোট হয়েছে প্রথম দফায়। উত্তর প্রদেশে স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় ও পাঞ্জাবে সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
উত্তর প্রদেশের ভোট হচ্ছে সাত দফায়। ইতিমধ্যে দুই দফার ভোট হয়ে গেছে। গতকাল ১৬টি জেলার ৫৯টি বিধানসভার আসনে ভোট হয়েছে। এসব আসনে ৬২৭ জন প্রার্থী লড়ছেন। উত্তর প্রদেশে তৃতীয় দফার ভোটে মোট ভোটার ২ কোটি ১৫ লাখের বেশি। উত্তর প্রদেশ বিধানসভার আসনসংখ্যা ৪০৩।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশে ভোট পড়েছে ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ আর পাঞ্জাবে ৬৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
উত্তর প্রদেশে ভোট হয়েছে হাথরস, ফয়জাবাদ, ইতাহ, কাসাগঞ্জ, মণিপুর, ফররুখবাদ, কনৌজ, এতাওয়াহ, অরিয়া, কানপুর দেহাত, কানপুর নগর, জালুম ঝাঁসি, ললিতপুর, হামিরপুর, মাহোবা জেলায়। এর আগে রাজ্যটিতে প্রথম দফায় ১০ ফেব্রুয়ারি ৫৮ আসনে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ৫৫ আসনে ভোট হয়।
উত্তর প্রদেশে প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান অখিলেশ যাদব কারহাল আসন থেকে লড়ছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এস পি সিং বাঘেলের সঙ্গে লড়াই চলছে তাঁর। উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাব ছাড়াও উত্তরাখন্ড, গোয়া ও মণিপুর রাজ্যের বিধানসভা ভোট গণনা হবে ১০ মার্চ।
এনডিটিভি জানায়, উত্তর প্রদেশে ভোট শুরুর পর থেকে সমাজবাদী পার্টি কানপুরে ইভিএম যন্ত্রে সমস্যার অভিযোগ তোলে। এ ছাড়া ইভিএমে তাদের প্রার্থীর ভোট বিপক্ষ দলের ব্যালটে পড়ার অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে।
এর আগে ২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে ৫৯ আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৪৯ আসন। ৯টি আসন পেয়েছিল সমাজবাদী পার্টি আর ১টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস।
এদিকে পাঞ্জাবের নির্বাচন ঘিরে নাটকীয় ঘটনা দেখা গেছে। প্রথমবারের মতো ১১৭ আসনের পাঞ্জাব বিধানসভার বহুমুখী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। পাঞ্জাব নিয়ে এত জল্পনা আগে দেখা যায়নি। তিন কৃষি আইন বিজেপি-বিরোধিতার মাত্রা তুঙ্গে তুলছিল।
রাজ্যবাসীর ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছিল দিন দিন। অবস্থা বেগতিক দেখে বিজেপির সবচেয়ে পুরোনো বন্ধু শিরোমণি আকালি দল মন্ত্রিত্ব ও জোট ছাড়তে বাধ্য হয়। কংগ্রেসে দলেও ঘটেছে রদবদল। অমরিন্দর সিংকে সরিয়ে চরণজিৎ সিং চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। আগামী ১০ মার্চ ভোটের ফলাফলে এ রদবদলের প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারবে দলটি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে রাজ্যে প্রথমবার উঠে আসে আম আদমি পার্টি (আপ)। তারাও এবারের নির্বাচনে বড় ধরনের চমক দেখাতে পারে। রাজ্য রাজনীতিতে অকালি দল ও বিজেপিকে ছাপিয়ে আজ তাদের প্রধান টক্কর কংগ্রেসের সঙ্গেই। এবার পাঞ্জাবের সব সমীক্ষায় এগিয়ে তারাই। বহুজন সমাজবাদী পার্টির নেত্রী সেই মায়াবতী এবার জোট বেঁধেছেন আকালি দলের সঙ্গে। এদিকে বিজেপির জোটসঙ্গী অমরিন্দর সিংয়ের দল ‘পাঞ্জাব লোক কংগ্রেস’। পঞ্চম শক্তি হিসেবে মঞ্চে হাজির রাজ্যের ২২টি কৃষক সংগঠনের ‘সংযুক্ত সমাজ মোর্চা’ ফ্রন্ট।
২০১৭ সালের পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৭৭টি আসন পেয়ে বিজেপি জোটের ১০ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল। ওই নির্বাচনে ২০ আসন পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছিল আম আদমি পার্টি।
পাঞ্জাবের নির্বাচনে এবার চোখ থাকবে চমকৌর সাহেব আসন থেকে মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি, অমৃতসর পূর্ব আসন থেকে শিরোমণি অকালি দলের বিক্রম সিং মাজিথিয়ার বিরুদ্ধে পাঞ্জাব কংগ্রেস প্রধান নভজ্যোত সিং সিধু, ধুরি থেকে আপের ভগবন্ত মান, পাতিয়ালা থেকে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, জালালাবাদ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সুখবীর সিং বাদল, লাম্বি আসন থেকে প্রকাশ সিং বাদল, মাজিঠা আসন থেকে গনিভ কৌর মাজিথিয়া এবং ভাটিন্ডা থেকে হরসিমরত কৌর বাদলের ওপর।