শিরোনাম
এক প্রতিবেশী নারীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক জড়িয়ে পড়েন স্বামী। এ নিয়ে সংসারে দীর্ঘদিন অশান্তি হচ্ছিল। কিন্তু তারপরেও স্বামীর আচরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে তাই বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। সেখানে বসেই জানতে পারেন, তিনি চলে আসার পর ওই প্রতিবেশী নারী এখন তার স্বামীর সঙ্গেই থাকছেন।
এমন খবর শুনে দিশেহারা ওই নারী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়েই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শনিবার এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মৈপীঠ উপকূল থানার ভুবনেশ্বরী পয়লার ঘেরি এলাকায়। ঘরের দরজা ভেঙে তিনজনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পরেই ওই নারীর স্বামী দীপক মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন- বুল্টি মণ্ডল (২৫) এবং তার দুই সন্তান মণিকা মণ্ডল (৯) ও মানস মণ্ডল। ১১ বছর আগে সাহেবঘাট এলাকার বাসিন্দা দীপকের সঙ্গে বুল্টির বিয়ে হয়। দীপক পেশায় রাজমিস্ত্রি। কাজের সূত্রে সম্প্রতি ব্যাঙ্গালুরু গিয়েছিলেন তিনি। গত বুধবারই বাড়ি ফেরেন। তারপরেই এই ঘটনা ঘটল। বুল্টির পরিবারের দাবি, দুই তিন বছর ধরে এক প্রতিবেশী নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে দীপকের। এ নিয়ে সংসারে বার বার অশান্তি হয়েছে। তারপরেও শোধরাননি দীপক।
ধনঞ্জয় কীর্তনিয়া নামে বুল্টির এক স্বজন জানান, সংসারে অশান্তির কারণেই বৃহস্পতিবার বিকেলে ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছিলেন বুল্টি। এরপর ওই রাতেই তিনি জানতে পারেন, ঘরে অন্য নারী সঙ্গে রয়েছে দীপক। এ কথা শুনেই শ্বশুর বাড়ি যায় সে। পরে রাতে ফের এই নিয়ে অশান্তিও হয়। প্রতিবাদ করায় বুল্টিকে মারধরও করেছে দীপক।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার দুই পরিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মীমাংসাও করে। কিন্তু আচমকা শনিবার সকালে আবার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে করে বাপের বাড়ি চলে আসে বুল্টি। এরপর বাবাকে পুকুরে মাছ ধরতে পাঠিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ছেলেমেয়ের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। তারপর নিজেও ওই আগুনেই আত্মঘাতী হন। ঘর থেকে আগুনের শিখা বের হতে দেখে বুল্টির বাবাসহ প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। কিন্তু দুই সন্তানসহ তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেশীরাই পরে থানায় খবর দেয়। এরপর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই দীপক পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
সূত্র: আনন্দবাজার