পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা ব্যর্থ: সেনা ফেরানোর ঘোষণা দিয়ে বললো রাশিয়া

ফানাম নিউজ
  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:৫৫

কয়েক সপ্তাহের টানটান উত্তেজনার পর অবশেষে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এতে পশ্চিমাদের সতর্কবার্তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে এবং এর মাধ্যমে একটি গুলি না ছুড়েও তাদের ধ্বংস করা ও চরম লজ্জা দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে মস্কো। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রুশ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটি’র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এক জ্বালাময়ী বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বারবার যুদ্ধের আশঙ্কাপ্রকাশ করা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কর্মকর্তাদের রীতিমতো তুলোধুনো করেছেন। তিনি বলেছেন, ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে, ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমা যুদ্ধ প্রোপাগান্ডা ব্যর্থ হয়েছিল।

রুশ এ কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, রাশিয়া একটি গুলি না ছুড়েও পশ্চিমাদের লজ্জা দিয়েছে ও ধ্বংস করে দিয়েছে।

এদিন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, বেলারুশে ইউক্রেন সীমান্ত এলাকায় কিছু রুশ সেনার প্রশিক্ষণ মহড়া শেষ হয়েছে। তাই তাদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

রুশ কর্মকর্তাদের এ ঘোষণার আগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশগুলো বারবার সতর্কবার্তা দিয়েছে, রাশিয়া যেকোনো মুহূর্তে সাবেক সোভিয়েত সদস্য ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে পারে। গত শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের বরাতে দাবি করা হয়েছিল, মঙ্গলবারের মধ্যেই ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে রুশ সেনারা।

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানও চলতি সপ্তাহ বলেছেন, তাদের সূত্র ও গোয়েন্দা তথ্যের হিসাব মোতাবেক, রাশিয়ার বিশাল সামরিক অভিযান যেকোনো দিন শুরু হতে পারে। আর তা শীতকালীন অলিম্পিক শেষ হওয়ার আগেই ঘটবে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।

যদিও রাশিয়া বরাবরই ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে। মস্কো বলেছে, বাধ্য না হলে তাদের ইউক্রেন আক্রমণ করার কোনো ইচ্ছা নেই।

রাশিয়া মূলত কিয়েভ-ন্যাটো বন্ধুত্বে নিরাপত্তা আশঙ্কার কথা জানিয়ে ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ বাড়িয়েছে। ইউক্রেন এখনো ন্যাটোর সদস্য নয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা এই সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। ন্যাটোর পক্ষ থেকেও কিয়েভকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছে।

ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হলে পশ্চিমা সেনারা রাশিয়া সীমান্তের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে মস্কোর। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অভিযোগ, পশ্চিমা জোটের সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠতা বাড়লে দেশটি ন্যাটো ক্ষেপণাস্ত্রের ঘাঁটি হয়ে উঠতে পারে, যা হবে রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। এটি ঠেকাতে সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখের বেশি সৈন্যসহ ভারী সমরাস্ত্র মোতায়েন করেছে মস্কো।

এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত কিয়েভের রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রিস্টাইকো কাছে সোমবার জানতে চাওয়া হয়েছিল, ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার ইচ্ছা থেকে কিয়েভের সরে আসার কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কিনা। জবাবে তিনি বিবিসি ইউক্রেনকে বলেছেন, যেভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে ও সেদিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমরা সরে আসতেও পারি।