শিরোনাম
যুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে। জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যম গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, বুধবারই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে জার্মান সরকারকে রিপোর্ট দিয়েছেন গোয়েন্দারা। যদিও সরকারিভাবে জার্মানি এনিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। হোয়াইট হাউসও খবরের সত্যতা স্বীকার করেনি। তবে যুদ্ধের আশঙ্কা যে বৃদ্ধি পেয়েছে, তা জার্মানি, ন্যাটো, আমেরিকার মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট। রবিবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ফের বড় সড় নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন রাশিয়াকে।
সোমবার ইউক্রেনে গিয়ে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা শলৎসের। বস্তুত, ইউক্রেন জার্মানির কাছে ফের অস্ত্রসাহায্য চেয়েছে। জার্মানি এখনো তাদের তা দিতে অস্বীকার করেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই এদিন দুই দেশের বৈঠক হওয়ার কথা। সব ঠিক থাকলে মঙ্গলবার মস্কোয় যাওয়ার কথা শলৎসের। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা।
সফর শুরুর আগে শলৎস জানিয়েছেন, রাশিয়া আগ্রাসন দেখালে বড়সড় নিষেধাজ্ঞার সামনে তাদের পড়তে হবে। সে কথা মাথায় রেখে যেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়। বস্তুত, শলৎস মস্কো গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে করছেন না কূটনীতিকরা। জার্মান প্রশাসনের একটি সূত্রও ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, মস্কোর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে জার্মানি খুব আশাবাদী নয়। যদিও এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছিলেন পুটিন আলোচনার প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
রাশিয়া অবশ্য জানিয়েছে, যুদ্ধের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তারা নয়, আগ্রাসন দেখাচ্ছে অ্যামেরিকা এবং ন্যাটোর বাহিনী। প্রয়োজনে রাশিয়া তার জবাব দেবে। অর্থাৎ, যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেও বল ন্যাটো এবং অ্যামেরিকার কোর্টে রাখতে চাইছে রাশিয়া। বুধবার আক্রমণের বিষয়টিও সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। তবে হোয়াইট হাউস রবিবার দাবি করেছে, এই সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সে কারণেই ইউক্রেন থেকে মার্কিন নাগরিক এবং কূটনীতিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ন্যাটোও একই নির্দেশ জারি করেছে।
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমেরিকা
জার্মান চ্যান্সেলর ফের নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা জানাননি। আমেরিকা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, রাশিয়ার বিশাল ব্যংকিং ব্যবস্থার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। যার জেরে রাশিয়ার অর্থনীতি সমস্যার মুখে পড়বে। একই সঙ্গে ন্যাটো জানিয়েছে, নর্ড স্ট্রিম ২ এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। জার্মানিতে গ্যাস পাঠানোর জন্য নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইন তৈরি করে ফেলেছে রাশিয়া। জার্মানি সম্মতি দিলেই তারা গ্যাস পাঠাতে শুরু করবে। নর্ড স্ট্রিম ২ এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও বিপুল অঙ্কের ক্ষতি হবে রাশিয়ার।
ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে উত্তেজনা এখনো চরমে। রাশিয়া সেখানে এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রেখেছে। সেনা স্ট্যান্ডবাই অবস্থানে আছে। অর্থাৎ, যে কোনো সময় যুদ্ধের জন্য তারা প্রস্তুত। রাশিয়া যেভাবে সেনা সাজিয়েছে, তা আক্রমণের জন্যই বলে মনে করছেন রণনীতি বিশেষজ্ঞরা। ন্যাটো এবং আমেরিকাও পূর্ব ইউরোপের একাধিক দেশে সেনা মজুত করে রেখেছে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে