চীন কি বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি হতে পারবে?

ফানাম নিউজ
  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:৫৭
আপডেট  : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২৩:০১

পৃথিবীর এক নম্বর অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, আর তারপরেই চীন। এশীয় পরাশক্তিটির নাটকীয় উত্থান ছিল গেল দশকের সবচেয়ে বড় চমক। সামরিক শক্তি, কূটনীতিতে বলীয়ান চীন এখন এশিয়াজুড়ে আধিপত্য ধরে রাখতে চাওয়া পশ্চিমা দুনিয়ার মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ। 

চীনের অর্থনীতিও সম্ভাবনায় ভরপুর। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মহল দেশটি কবে এদিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলবে তা নিয়ে নানান পূর্বাভাস দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে- চীন কী অর্থনীতির দুর্বার গতি নিয়ে সব সেরার স্থানটি দখল করতে পারবে? 

বেশিরভাগ পর্যবেক্ষকই মনে করেন বিকাশের বর্তমান গতি ধরে রাখলে অবশ্যই পারব; এ ধারণাকে অন্যায্যও বলা যায় না। তবে বাস্তবতার আতস চিরকালই নির্মম। সেই প্রতিচ্ছবিতে ঝকঝকে প্রাসাদের কোণের বৈসাদৃশ্য উঠে আসে। চীনের দিকেও দূরদৃষ্টি নিয়ে তাকালে চোখে পড়বে বেশকিছু দুর্বলতার চিহ্ন। 

ঋণ সংকট, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার মতো ঘটনায় দ্বিতীয় স্থান পর্যন্তই আটকে থাকতে পারে চীন। 

২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত মার্কিন গণমাধ্যম এবং অর্থনৈতিক তথ্য বিশ্লেষক ওয়েবসাইট ব্লুমবার্গের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে উঠে এসেছে তেমনই চিত্র। চীনের ব্যাপারে এই আভাস ছিল প্রথম, যা চলতি বছর আবারো সংশোধন করেছেন গবেষকরা। কিন্তু, তাতেও আশাবাদের চেয়ে ঝুঁকির কালোছায়াই বেড়েছে চীনের অগ্রগতির দুয়ারে। তবে সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।

বিকল্প ভবিষ্যৎগুলো:

যেমন রেখাচিত্রে প্রবৃদ্ধির বর্তমান বার্ষিক গতিকে ধরে রাখতে পারলে- আর মাত্র এক দশকের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে চীন। কিন্তু এই ফলাফল একেবারে সুনিশ্চিত নয়। এজন্য মৌলভিত্তিসহ চীনা অর্থনীতির নানামুখী ভবিষ্যৎ অবস্থান তুলে ধরেছে ব্লুমবার্গ। যেমন গবেষকরা এমন একটি ভবিষ্যৎ চিন্তা করেছেন যেখানে সফল সংস্কারে উদ্দীপিত চীনা অর্থনীতি হবে এক নম্বর। আবার তার বিপরীতে ক্ষয়িষ্ণু জনসংখ্যার কারণে প্রবৃদ্ধির পতন, আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদির সাথে সাথে চীনে ক্রমবর্ধমান ঋণের পাহাড় মিলিয়ে নেমে আসতে পারে চরম দুর্যোগ। 

মৌলিক ভিত্তি অনুসারে প্রথম আভাস অনুযায়ী বর্তমান প্রবৃদ্ধির গতি বজায় থাকলে যা হবে:

এই অনুসারে ২০৩০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলবে চীন 

দ্বিতীয় আভাস- আর্থিক সংকট দেখা দিলে: 

বিশ্ব অর্থনীতির প্রথমস্থান অধিকার করতে গিয়ে অতীতে ঋণ সংকটে পড়েছিল জাপান। চীনের ভাগ্যেও ঘটতে পারে একই ঘটনা। ২০০৮ সাল থেকে দেশটিতে ক্রমে বেড়ে চলা দেনার বোঝা সেই ঝুঁকিরই ইঙ্গিত দেয়।  

তৃতীয় আভাস- মন্থর গতির হুমকি বাস্তবে রূপ নিলে: 

চীনের উত্থান বন্ধ হতে শুধু আর্থিক খাতের মন্দাই হতে হবে তা নয়। আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ঘাটতি এবং সুশাসনের ব্যর্থতাও একই পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এই সময়ে যদি আবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভালো পারফর্ম করে তাহলে প্রথম স্থান কার দখলে যাবে- তা বলা মুশকিল। 

সূত্র: ব্লুমবার্গ