শিরোনাম
ভারতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার। গোবেচারা টাইপের দেখতে আদেশ নামে ওই অপরাধীর কর্মকাণ্ড সিনেমাকেও হার মানিয়েছে।
খুন করার জন্য রাতের আঁধারকেই বেছে নিতেন আদেশ। সকালে একেবারে ছাপোষা দর্জি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
একজন ভালো দর্জি হিসেবে এক ডাকে সবাই চিনেন আদেশ খামরাকে। নিজের এবং আশপাশের এলাকায় ভালো নামডাকও রয়েছে তার।
দিনে জামাকাপড় সেলাই করতেন, আর রাতে হলেই বদলে যেত তার রূপ। তখন আর তিনি সবার আদেশ দর্জি নন, হয়ে উঠতেন এক ভয়ঙ্কর খুনি!
খুন করার জন্য রাতের আঁধারকেই বেছে নিতেন আদেশ খামরা। সকালে একেবারে ছাপোষা দর্জি। ফলে পাড়ার লোক তো বটেই, এমনকি বাড়ির লোকেরাও কোনো দিন টের পাননি আদেশ একজন সিরিয়াল কিলার। সম্প্রতি পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন আদেশ ও তার গ্যাং।
গত ৯ বছর ধরে ভারতের ছয় রাজ্যে অপারেশন চালিয়ে ৩৩ জনকে খুন করেছেন আদেশ খামরা। তার শিকার ছিলেন ট্রাকচালকরা।
হাইওয়ের ধারে ধাবাগুলোতে জাল বিছাতেন আদেশ ও তার গ্যাংয়ের লোকেরা। সেখানেই ট্রাকচালকদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে তুলত তার গ্যাং। তাদের বিশ্বাস অর্জন করত।
এর পরই সেই ট্রাকচালকের গাড়িতে উঠতেন আদেশ। একটু ফাঁকা জায়গায় আগে থেকেই তার দলের লোকজন অপেক্ষা করতেন।
হাইওয়ে ধরে ট্রাক সেই জায়গায় পৌঁছতেই চালকের ওপর হামলা চালাতেন আদেশ। তার পর তাকে খুন করে সব জিনিস— এমনকি ট্রাকের মালপত্র লুট করে ফাঁকা জায়গায় সেই ট্রাক ফেলে রেখে আসতেন।
মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে ট্রাকচালকদের খুনের ঘটনা দিনের পর দিন বাড়ছিল। মহারাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রদেশ পুলিশ এ নিয়ে তদন্তে নামে।
এই দুই রাজ্যে যত খুন হয়েছে সব নমুনা সংগ্রহ করে তারা। দেখা যায়, দুই রাজ্যে যত ট্রাকচালক খুন হয়েছেন, খুনের ধরন সব এক।
তদন্ত আরও জোরদার করা হতেই এক এক করে সব সূত্র এক জায়গায় এনে দুই রাজ্যের পুলিশ ভোপালের মণ্ডিদীপে আদেশের এলাকায় পৌঁছায়।
প্রথমে খুনের কথা স্বীকার করতে চাননি আদেশ। তার পর তিনি যা বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে চমকে ওঠেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
তাদের জেরায় অবশেষে আদেশ স্বীকার করেন, ছয় রাজ্যে ৩৩ জন ট্রাকচালককে খুন করেছেন তিনি।