শিরোনাম
উত্তেজনার পারদ আরও ঊর্ধমুখী। ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনাদের উপস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের চরম উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার ইউক্রেনের ‘ঘাড়ের ওপর’ যুদ্ধমহড়া শুরু করেছে।
যৌথ সামরিক মহড়াকে ‘মানসিক চাপ সৃষ্টির যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলোনস্কি।
প্রতিবেশী দেশটির পাশেই বেলারুশ সীমান্তে দক্ষ সেনাদের নিয়ে টানা ১০ দিন মহড়া চালিয়ে যাবে মস্কো। ইউক্রেনকে আক্রমণ না করতে পশ্চিমা চাপকে পাত্তা না দিয়েই এ মহড়া শুরু হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও বরাবরই রাশিয়া বলে আসছে ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তা সত্ত্বেও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, কোনো ধরনের হুমকি বা আলটিমেটাম ইউক্রেন সংকটের সমাধান দেবে না। এএফপি, দি গার্ডিয়ান, বিবিসি। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া যৌথ মহড়া স্নায়ুযুদ্ধের পর সাবেক সোভিয়েত বেলারুশে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় মোতায়েন বলে দাবি করছে ন্যাটো। এই মহড়া উপলক্ষ্যে গত এক মাস ধরেই বেলারুশে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে মস্কো। এর মধ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই যৌথ সামরিক মহড়ায় পূর্ব ইউরোপের উত্তেজনার আগুনে ‘ঘি ঢেলে দেবে’। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউজ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এ নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির চিঝভ বলেছেন, রাশিয়া এখনো মনে করে ইউক্রেন নিয়ে সৃষ্ট সংকটের উত্তেজনা নিরসনে কূটনীতি সহযোগিতা করতে পারে। কাউকে আক্রমণ করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই মস্কোর। কিন্তু তিনি সতর্ক করে বলেছেন, মত পরিবর্তনে রাশিয়াকে উসকানি না দেওয়াটাই সবচেয়ে বেশি হলো গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ হলো একমাত্র ‘পশ্চিমা উসকানিই’ ইউক্রেনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে দেশটি দাবি করেছে, মহড়া শেষে রুশ সেনারা বাড়ি ফিরে যাবে।
আরও এক হাজার সেনা মোতায়েনে প্রস্তুত ব্রিটেন : ইউক্রেন বিষয়ে যেকোনো মানবিক সংকট মোকাবিলায় ব্রিটেন আরও এক হাজার সেনা মোতায়েনে প্রস্তুত রয়েছে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয় বুধবার। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ন্যাটো ও পোল্যান্ড সফর করছেন। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ ইউক্রেন সংকট নিয়ে বৈঠক করছেন। সেখানেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘পশ্চিমের হুমকি, ধামকি, চোখরাঙানি কিছুই ইউক্রেনকে নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা কমাতে পারবে না।’
ব্রাসেলসে ন্যাটোপ্রধান জেন্স স্টলেনবার্গের সঙ্গে বৈঠকের আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘জোট হিসাবে আমরা যেসব নীতির বিষয়ে আপস করব না, সেসব অবশ্যই আমাদের স্পষ্ট করতে হবে।’ ব্রাসেলস থেকে জনসন পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারসতে যাবেন। ব্রিটেন বর্তমানে এস্তোনিয়ায় তার সৈন্য সংখ্যা ৯০০ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৭৫০ করছে। ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ অঞ্চলের মানবিক সংকট মোকাবিলায় আরও এক হাজার ব্রিটিশ সেনা প্রস্তুত রাখার বিষয়ে জনসন অঙ্গীকার করেছেন।
ইউক্রেন সীমান্তে আরও ১ লাখ সেনা পাঠিয়েছে রাশিয়া : ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে রাশিয়া। যেকোনো সময় রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সীমান্তে আরও এক লাখ রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের দাবি অনুযায়ী ইউক্রেনের উত্তর সীমান্তে এসব সেনা মোতায়েন করেছে মস্কো।
বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এ অভিযোগ এনেছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘রাশিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে সেনাসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করা হচ্ছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায়ও এসব সক্ষমতা ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে অব্যাহতভাবে জড়ো করা হচ্ছে।