শিরোনাম
কাশ্মীর নিয়ে এক টুইটের জেরে ভারতীয়দের তোপের মুখে পড়েছে দক্ষিণ কোরীয় গাড়িনির্মাতা ব্র্যান্ড হুন্দাই। কয়েকদিন ধরে ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ‘বয়কট হুন্দাই’ ট্রেন্ডিং চলছে। এতে ভারতের শত কোটি জনসংখ্যার বিশাল বাজার হারানোর শঙ্কায় পড়েছে হুন্দাই মোটর।
ভারতে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা করে আসছে হুন্দাই। ধীরে ধীরে ভারতীয় বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়িনির্মাতার আসন জিতে নিয়েছে তারা। কিন্তু কে জানতো, প্রতিষ্ঠানটির পাকিস্তান শাখার এক টুইট কাঁপিয়ে দেবে সেই অবস্থান।
ঘটনা কী?
বহু বছর ধরে ৫ ফেব্রুয়ারিকে কাশ্মীর সংহতি দিবস পালন করে আসছে পাকিস্তান। গত শনিবার এ দিনটি উপলক্ষে হুন্দাইয়ের পাকিস্তান শাখার টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইট করা হয়। এতে বলা হয়, আসুন, আমরা আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করি এবং সমর্থনে পাশে দাঁড়াই। তারা আজও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
হুন্দাই পাকিস্তানের এই টুইট ঘিরে ভারতে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোরীয় গাড়িনির্মাতাকে বয়কটের ডাক ট্রেন্ডিং হয়ে ওঠে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হয়ে হুন্দাইয়ের আঞ্চলিক রাজনীতিতে নাক গলানোর দরকার কী ছিল?
ভারতীয়রা ক্ষেপলো কেন?
ভারত-পাকিস্তান উভয়ের কাছেই খুব স্পর্শকাতর একটি ইস্যু কাশ্মীর। ভারত কাশ্মীরকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ দাবি করে। ভূস্বর্গ বলে খ্যাত এলাকাটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি করে পাকিস্তানও।
নয়াদিল্লি ভারত-শাসিত কাশ্মীর নামে ও ইসলামাবাদ পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর বা আজাদ কাশ্মীর নামে অঞ্চলটির দুটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে কাশ্মীরের দখল নিতে একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।
কাশ্মীর টুইট নিয়ে হুন্দাইয়ের অবস্থান কী?
বিতর্কের জেরে হুন্দাই পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত টুইটটি মুছে ফেলেছে। এ নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ভারতীয় শাখাও।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হুন্দাই মোটর ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় বাজারে রয়েছে এবং আমাদের নীতি জাতীয়তাবাদকে সম্মান করার পক্ষে। হুন্দাই মোটর ইন্ডিয়াকে জড়িয়ে অযাচিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এ দেশের প্রতি আমাদের অতুলনীয় প্রতিশ্রুতি ও পরিষেবাকে ব্যাহত করছে। ভারত হুন্দাই ব্র্যান্ডের কাছে দ্বিতীয় বাড়ির মতো। অসংবেদনশীল যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে এবং আমরা এ জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির তীব্র নিন্দা জানাই। ভারতের প্রতি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে আমরা দেশটির পাশাপাশি এর নাগরিকদের উন্নতির জন্যেও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
তবে এসব কথায় মন গলেনি ভারতীয়দের। অর্থাৎ ক্ষতি যা হওয়ার তা এরই মধ্যে হয়ে গেছে।
সূত্র: কোয়ার্টজ