শিরোনাম
পাকিস্তানের করাচির একটি কারাগারে থেকে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় সেরা ফলাফল করেছেন সৈয়দ নাঈম শাহ নামে এক কয়েদী। এই অর্জনের পুরস্কারস্বরূপ ১০ লাখ রুপির শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেছেন তিনি।
ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব পাকিস্তান (আইসিএপি) তাকে এই বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের জেনারেল হাইস্কুল পরীক্ষায় যেসব অনিয়মিত শিক্ষার্থী প্রাইভেটভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী এই যুবক।
ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে ২০১০ সালে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় নাঈমকে। এর মাঝে তিনি ১১ বছর কারাভোগ করেছেন। তবে বিচারের সময়ে বন্দি থাকা, পড়াশোনা, ভালো ব্যবহার ও রক্তদানের কারণে আর ছয় বছরের মতো কারাগারে থাকতে হবে তাকে।
করাচির কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নাঈম বলেন, আমি যা অর্জন করেছি, দৃঢ় প্রত্যয় না থাকলে এই কারাগারে বসে তা সম্ভব না।
১৮৯৯ সালে পাকিস্তানের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চলে এই কারাগারটি নির্মাণ করে ব্রিটিশরা। বিশ্বের আরও অনেক ঘনবসতিপূর্ণ কারাগারের মতো করাচির এই কারাগারেও ধারণক্ষমতার বেশি কয়েদী থাকেন। ২ হাজার ৪০০ জন কয়েদী থাকার কথা থাকলেও এখানে থাকেন প্রায় ৬ হাজার কয়েদী।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, পাকিস্তানের অধিকাংশ কারাগারেই ধারণক্ষমতার অধিক কয়েদী থাকেন। কারাগারগুলোতে আলো-বাতাসের অভাব, অপর্যাপ্ত শয্যা, নিরাপদ পানি এবং ওষুধেরও অভাব রয়েছে।
কারাগারের ভেতরে স্থাপিত একটি ক্লাসরুমে বসে নাঈম জানান, কারাগারে বয়স্ক ব্যক্তিরাও তাকে পড়াশোনায় অনেক সাহায্য করেছেন এবং অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।
কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট সাইদ সুমরো বলেন, করাচির কেন্দ্রীয় কারাগারে নাঈমের মতো আরও ১২০০ কয়েদী পড়াশোনা করেন, কিন্তু নাঈমের মতো সফলতা আর কেউই পাননি।
তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃত্তি নিতে হলে নাঈমকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করতে হবে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইসিএপি কর্মকর্তা।
নাঈম মনে করেন, কারাগারে থেকে এই বৃত্তি নেওয়া তার জন্য কঠিন হবে। তাই তিনি তার মামলা পুনর্বিবেচনা করার জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং সিন্ধু প্রদেশের চিফ এক্সিকিউটিভের কাছে আবেদন করবেন।