শিরোনাম
ইউক্রেনে রাশিয়া ‘সীমিত অনুপ্রবেশ’ চালাচ্ছে—মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এমন মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন দেশটির (ইউক্রেন) প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘সীমিত অনুপ্রবেশ বলে কিছু নেই। হতাহতের ঘটনা কখনো ছোট হয় না। প্রিয়জন হারানোর বেদনাও সামান্য হয় না।’ খবর বিবিসির।
ক্ষমতায় আসার প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে গত বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া ‘সীমিত অনুপ্রবেশ চালালে’ যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলোর প্রতিক্রিয়াও হবে সীমিত। অর্থাৎ তুলনামূলক কম প্রতিক্রিয়া জানাবে এসব দেশ। আর এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। তবে কোনো ধরনের হামলা চালানোর পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে দেশটি।
ন্যাটোর সদস্য হিসেবে ইউক্রেনকে না নিতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে কয়েক দফায় দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের মাধ্যমে সীমান্তের কাছে ন্যাটোর সেনা ও অস্ত্র সরঞ্জাম মোতায়েন চায় না রাশিয়া।
স্থানীয় সময় গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেনে হামলা চালালে পুতিনকে চড়া মূল্য দিতে হবে। তবে রাশিয়া কী পদক্ষেপ নেবে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। বাইডেন বলেন, ‘হামলা চালালে রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে, আর রাশিয়া যা করবে তার ওপর এটা নির্ভর করবে। যদি সীমিত পরিসরে হামলা হয়, তাহলে আমাদের ভাবতে হবে কী করা উচিত, আর কী করা উচিত নয়।’ তিনি আরও বলেন, সীমিত পরিসরে হামলা চালালে তুলনামূলক কম প্রতিক্রিয়া জানাবে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলো।
স্থানীয় সময় শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই লাভরভের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্লিঙ্কেন বলেন, রাশিয়া যদি স্নায়ুযুদ্ধ চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত।
রাশিয়া বলছে, তাদের সীমান্তের কাছে ন্যাটো সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ক্রেমলিন আরও বলেছে, বাইডেনের মন্তব্যে পরিস্থিতি বিপর্যয়কর হতে পারে।
ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার মাথাব্যথা বেশ পুরোনো। ২০১৪ সালে এক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে উৎখাত হয় তৎকালীন ইউক্রেন সরকার। ওই সরকার পশ্চিমাবিরোধী এবং রাশিয়ার পক্ষে ছিল। ইউক্রেনের রুশপন্থী সরকারের পতনের পর দেশটির অধীন থাকা ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এ ছাড়া পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেয় রাশিয়া। এসব ঘটনায় ১৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।
এ ছাড়া পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে চায় ইউক্রেন। এ নিয়ে রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করা যাবে না। ইউরোপের পূর্ব দিকে আর বিস্তার ঘটানো যাবে না ন্যাটোর। সবকিছুর মধ্যে গত বছর শেষের দিক থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে মস্কো।