২০-৩০ বছরে জাহাজে কার্বনমুক্ত পরিবহনে প্রয়োজন দেড় ট্রিলিয়ন ডলার

ফানাম নিউজ
  ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪২

করোনা মহামারি সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী জাহাজ পরিবহন কোম্পানিগুলো ব্যাপক মুনাফা লাভ করেছে। কিন্তু জাহাজ শিল্প খাতকে কার্বনমুক্ত করতে হলে আরও অনেক বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন। বলা হচ্ছে, ২০ থেকে ৩০ বছরে জাহাজে কার্বনমুক্ত পরিবহন খরচ পড়বে দেড় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সিঙ্গাপুরে এ সংক্রান্ত একটি ফোরামের আয়োজন করা হয়। এতে জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি শিপিং কোম্পানি ওশ্যান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেসের বৈশ্বিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেরেমি নিক্সন।

জেরেমি নিক্সন বলেন, একটি শিল্প খাতে ১০ বিলিয়ন অর্থাৎ এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার অথবা ২০ বিলিয়ন অর্থা দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার মুনাফা করা ভালো। কিন্তু আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরে আমাদের শিল্পকে কার্বনমুক্ত করার জন্য প্রায় দেড় ট্রিলিয়ন অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি বলেন, কারণ আমাদের টেকসই মুনাফা দরকার।

চলতি বছর ২০ জানুয়ারি নিক্সন ‘‘গ্রিন বিজনেস: কার্বনমুক্ত টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক’’ প্যানেল আলোচনায় জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী জাহাজে পরিবহনের জন্য এখনো ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ জীবাশ্ম জ্বালানি তেল ব্যবহার করা হয়। বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৩ শতাংশ কার্বন নির্গত হয় এই জীবাশ্ম জ্বালানি তেল ব্যবহারে।

নিক্সন বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে নিট জিরো কার্বন নির্গমনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শিপিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে ‘ক্রমবর্ধমান ঐকমত্য’ রয়েছে। কিন্তু গাড়ির বিপরীতে, যা দ্রুত বৈদ্যুতিক হয়ে যাচ্ছে, এই মুহূর্তে ব্যাটারি প্রযুক্তি ৩০ দিনের জন্য সমুদ্রে এক হাজার টন জাহাজ চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

তিনি বলেন, ব্যবস্থার পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি হবে পরিমাপযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যে নবায়নযোগ্য শক্তিকে সুরক্ষিত করা। নিক্সন এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রকদের পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজারভিত্তিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে যা জ্বালানি তেলকে শূন্য নির্গমন জ্বালানির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আরও প্রতিযোগিতামূলক স্তরে নিয়ে আসবে। একই সঙ্গে যারা কম কার্বন নিঃসরণে উদ্যোগ নিচ্ছে তাদের বিভিন্ন খাতে রাজস্ব ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

ইঞ্জি সাউথ ইস্ট এশিয়ার প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা জ্যারেড চং বলেছেন, সিঙ্গাপুরের স্বয়ংচালিত শিল্পে এখনো বড় বাধা রয়েছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশনগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিঙ্গাপুরের বৃহত্তম ট্যাক্সি অপারেটর কমফোর্টডেলগ্রোর সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করছে এই ফরাসি কোম্পানিটি। তিনি বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে ফলে ইলেক্ট্রনিক পরিবহন চার্জিংও বাড়বে।

ডাচ এগ্রিকালচার ডিজিটাল সলিউশন প্রোভাইডার রিডার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিডার চায়না। প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার ফুলকো উইজডুগে বলেছেন, চীনে জ্বালানি সংকট দেশটিকে কৃষিতে প্রযুক্তি ত্বরান্বিত করতে প্ররোচিত করতে পারে। তিনি বলেন, যেখানে পর্যাপ্ত সম্পদের অভাব রয়েছে সেখানে কোম্পানিগুলোকে নতুন কোনো উপায় বের করতে হবে, যেনো তারা পর্যাপ্ত জ্বালানি শক্তি উৎপাদন করতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা ডিজিটাইলেশন এবং রোবোটিক্সেরও বড় ভূমিকা দেখতে পাচ্ছি।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া