পাল্টা জবাব দেওয়ার অধিকার আমিরাতের রয়েছে: যুক্তরাষ্ট্র

ফানাম নিউজ
  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৫৩

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবু ধাবি বিমানবন্দরের কাছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবারের ওই হামলায় তেলের ট্রাক বিস্ফোরিত হয়ে তিন জন নিহত হন। পরে আমিরাতের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর দাবি করে হুথি। অন্যদিকে এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই হামলার নিন্দা জানিয়ে এর পাল্টা জবাব দেওয়ার অধিকার আমিরাতের রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় একটি উপসাগরীয় আরব মিত্রের ওপর হামলা হুথি বিদ্রোহী এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যকার যুদ্ধকে একটি নতুন ধাপে নিয়ে গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমিরাতের মাটিতে এবং বেসামরিক স্থাপনায় হুথি মিলিশিয়াদের এই সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের ঘটনা কোনও শাস্তি ব্যতিরেকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে না। এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার আমিরাতের রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, হুথি বিদ্রোহীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে ওয়াশিংটন কাজ করবে।

রিয়াদের নেতৃত্বাধীন যে সামরিক জোট বছরের পর বছর ধরে ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে আসছে সংযুক্ত আরব আমিরাতও সেই জোটের সদস্য। এই জোট ইয়েমেনে যে কোনও মূল্যে হুথি বিদ্রোহীদের পরাস্ত করতে চায়।

সৌদি জোটের আক্রমণের পাল্টা জবাব হিসেবে প্রায় নিয়মিতভাবেই সৌদি আরবে ড্রোন হামলা চালিয়ে থাকে হুথি। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুইটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর দেশটির তেল উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। হুথি বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় স্বীকার করলেও এ ঘটনায় তেহরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করা হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান। এর আগে পরেও দফায় দফায় হুথি বিদ্রোহীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে সৌদি আরব।

আমিরাতে এ পর্যন্ত গুটিকয়েক হামলার দায় স্বীকার করেছে হুথি। তবে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ সেগুলোর বেশিরভাগই অস্বীকার করেছে। অবশ্য সোমবারের হামলার ঘটনাটি আমিরাতি কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ারও অঙ্গীকার করেছে দেশটি।

আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম জানিয়েছে, তেল প্রতিষ্ঠান অ্যাডনক এর গুদামের কাছে মুসাফা শিল্প এলাকায় তিনটি ট্রাক বিস্ফোরিত হলে তিন জন নিহত এবং আরও ছয় জন আহত হয়েছে। নিহতদের দুই জন ভারতীয় এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিক। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, মুসাফা এলাকা থেকে কালো ধোঁয়া উড়ছে। আবু ধাবি পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক তদন্তে উভয় পাশে ছোট প্লেনের অংশ পাওয়া গেছে, যা ড্রোনের হতে পারে, এ থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।’ তবে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।