শিরোনাম
ভারতের উত্তর প্রদেশের আরও এক মন্ত্রী পদত্যাগ করলেন। গত মঙ্গলবার মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি বিজেপি ছেড়েছিলেন শ্রমমন্ত্রী স্বামীপ্রসাদ মৌর্য। বুধবার মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী দারা সিং চৌহান। তাঁর পদত্যাগের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) নেতা অখিলেশ যাদব টুইট করে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে লেখেন, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে এসপি ও তার সহযোগীরা এগিয়ে যাবে। এ লড়াই নিরন্তর।
স্বামীপ্রসাদ মৌর্যর মতো দারা সিং চৌহানও রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণির নেতা। মৌর্যর মতো তিনিও বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ২০১৫ সালে। বিজেপির অনগ্রসর মোর্চার সভাপতি হিসেবে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মন্ত্রী হন। বিভিন্ন সূত্রের খবর, তিনিও সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিতে চলেছেন। মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার গত মঙ্গলবার বলেছিলেন, উত্তর প্রদেশে ১২-১৩ জন বিজেপির মন্ত্রী ও বিধায়ক দল ছাড়তে চলেছেন।
তবে বিজেপিও চুপ করে বসে নেই। তারা প্রত্যাঘাত শুরু করেছে দুভাবে। বুধবার তারা দলে টেনেছে অখিলেশ যাদবের দল এসপির বিধায়ক হরিওম যাদব, এসপির সাবেক বিধায়ক ধর্মপাল সিং ও সাহারানপুর জেলার বেহাট কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক নরেশ সাইনিকে। হরিওমকে দলবিরোধী কাজের জন্য গত বছর বরখাস্ত করা হয়েছিল।
দল ভাঙানো ছাড়া বিজেপি অন্যভাবেও সক্রিয়। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে বিরামহীনভাবে বিরোধীদের ‘হেনস্তা’র অভিযোগ অনবরত শোনা যাচ্ছে। সেই ঢংয়ে মন্ত্রিত্ব ও বিজেপি ত্যাগের পরদিনই স্বামীপ্রসাদ মৌর্যের বিরুদ্ধে গতকাল এক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে এক অনুষ্ঠানে ‘ঘৃণা ভাষণ’-এর অভিযোগ আনা হয়েছে। উত্তর প্রদেশের সুলতানপুর জেলা আদালতের জারি করা ওই পরোয়ানায় গতকালই তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি যাননি। এখন তাঁকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ, ২০১৪ সালে স্বামীপ্রসাদ মৌর্য এক অনুষ্ঠানে কয়েকজন হিন্দু দেবদেবীর নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, বিয়ের সময় এঁদের পূজা করা উচিত নয়। দলিত ও অনগ্রসরদের দাসত্বের জন্য এটা উচ্চবর্ণ হিন্দু শাসনব্যবস্থার চক্রান্ত। দুই বছর পরেই মৌর্যর বিজেপিতে যোগদান এবং পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিত্বলাভ। এত দিন ধরে ঘৃণা ভাষণের অভিযোগে তাঁকে আদালতের মুখোমুখি হতে হয়নি।
বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরাখন্ডের হরিদ্বারে আয়োজিত ‘ধর্ম সংসদ’ থেকে মুসলমানদের গণহত্যার ডাক দেওয়ার বিরুদ্ধেও বিজেপির কোনো নেতাকে সরব হতে দেখা যায়নি। কিন্তু বিজেপি ছাড়ার পরদিনই স্বামীপ্রসাদ মৌর্যর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলো। স্বামীপ্রসাদ মৌর্য জানিয়েছেন, অনুগামীদের সঙ্গে আলোচনার পর আগামীকাল শুক্রবার তিনি পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ ঠিক করবেন।