শিরোনাম
জার্মানিতে অমিক্রনের দাপটে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৮০ হাজার ৪৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ৩৮৪ জন। জার্মানিতে মহামারি শুরুর পর এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত বছরের ১৮ নভেম্বর সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার ৩৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
স্থানীয় সময় বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে জার্মানির সংক্রামক রোগ—সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্র ‘রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট’। গবেষণা কেন্দ্রটি বলছে, জার্মানিজুড়ে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তা উদ্বেগজনক।
বড়দিনের উত্সব ও নতুন বছর পালন নিয়ে নানা বিধিনিষেধের মধ্যেও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ। এতে জার্মানিজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই দেশটির ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। এ কারণেই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীরা আগের মতো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত জার্মানিতে করোনায় মৃত্যু ১ লাখ ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেশটিতে এত সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর কারণে সমালোচিত হচ্ছেন রাজনীতিকেরা। অভিযোগ উঠেছে, সদ্য গঠিত নতুন কেন্দ্রীয় সরকার ও ১৬টি রাজ্য সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনীহা ও বিলম্বের কারণেই মূলত সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না।
সব কিছুর মধ্যে আবার জার্মানির বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিত্সাকর্মীর সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এই মুহূর্তে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীই বাড়িতে অবস্থান করছেন। আর বিশেষ শারীরিক জটিলতা না থাকলে রোগীদের কোনো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না।
জার্মানির ডের জাইট পত্রিকা জানিয়েছে, দেশের ১৬ রাজ্যের মধ্য সবচেয়ে জনবহুল নর্থ রাইন-ভেস্টফালিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ প্রায় ১১ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে। অপর দিকে পূর্বাঞ্চলের স্যাক্সনিতে সর্বোচ্চ ৮০ জন মারা গেছেন।
এর আগে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ৭ জানুয়ারি ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলো জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে আলোচনায় বসলেও কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে নির্দেশনা এসেছে, বুস্টার ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদের সর্বত্র যাতায়াতে কোনো বাধা থাকবে না। ভ্রমণের ক্ষেত্রে করোনার পিসিআর টেস্ট করতে বলা হয়েছে। হোটেল বা রেস্তোরাঁগুলোতে টিকার দুই ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদের প্রমাণসাপেক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া একসঙ্গে সর্বোচ্চ দশজন টিকা গ্রহণকারীর দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, দুই পরিবার থেকে দুজনের বেশি লোক দেখা করতে পারবেন না। দোকানপাট, সুপারশপ, গণপরিবহন, বিমানবন্দর সর্বত্র মাস্ক পরতে হবে। এদিকে করোনার দাপটের মধ্যেও জার্মানিতে স্কুল খোলা রয়েছে।
এর মধ্যেই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও গত শনিবার জার্মানির বন্দর শহর হামবুর্গ, ফ্রাঙ্কফুর্ট, ডুসলডর্ফ, ড্রেসডেন শহরে কয়েক হাজার মানুষ করোনা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে এবং টিকাগ্রহণে অসম্মতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।