শিরোনাম
শিগগির সুদের হার বাড়াতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ওপর এর প্রভাব পড়বে বলে আগেভাগেই সতর্ক হতে বলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তারা জানিয়েছে, পূর্বপ্রত্যাশিত সময়ের আগেই ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের এমন পদক্ষেপ অর্থনৈতিক বাজারগুলোকে কাঁপিয়ে দিতে পারে। এতে বিদেশে অর্থপ্রবাহ কমে যাওয়া এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটতে পারে। খবর রয়টার্সের।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক ব্লগে আইএমএফ জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে। সেখানে বছরের শেষের দিকে মুদ্রাস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রকাশের আগেই এসব কথা জানিয়েছে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
আইএমএফ বলেছে, মার্কিন মুদ্রা নীতি ধারাবাহিক এবং সুপরিকল্পিতভাবে কঠোর হলে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ওপর তার ‘সামান্য’ প্রভাব পড়তে পারে। এতে আর্থিক ব্যয় বাড়লেও বিদেশি চাহিদার কারণে সেই ক্ষতি পূরণ হয়ে যাবে।
ফেডারেল ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানো এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে দাতা সংস্থাটি বলেছে, উদীয়মান দেশগুলোকে অর্থনৈতিক অস্থিরতা ঠেকাতে সম্ভাব্য লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।
এর আগে, চলতি সপ্তাহে ফেডারেল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জেমস বুলার্ড জানান, তারা আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই সুদের হার বাড়াতে পারেন। এই পদেক্ষেপ আরও কয়েক মাস পরে নেওয়া হবে বলে আগে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ‘মূল্যস্ফীতি’ ঠেকাতে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এখনই আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন এ কর্মকর্তা।
ব্লগে আইএমএফ লিখেছে, ফেডারেল ব্যাংকের দ্রুত সুদের হার বৃদ্ধি অর্থনৈতিক বাজারগুলোকে বিপর্যস্ত এবং বিশ্বব্যাপী আর্থিক অবস্থাকে সংকটে ফেলতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা ও বাণিজ্যে ধীরগতি নেমে সাথে আসতে পারে এবং উদীয়মান বাজারগুলোতে মূলধনের বহিঃপ্রবাহ এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটতে পারে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, উচ্চ সরকারি-বেসরকারি ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি এবং স্বল্প কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থাকা উদীয়মান বাজারগুলো এরই মধ্যে মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মানে পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেছে, শক্তিশালী মুদ্রাস্ফীতির চাপ বা দুর্বল প্রতিষ্ঠান থাকা উদীয়মান বাজারগুলোকে মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বেঞ্চমার্ক সুদের হার বাড়াতে দ্রুত কাজ করা উচিত। সংস্থাটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে কঠোর নীতি প্রণয়নের বিষয়ে স্পষ্ট ও ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে, বিদেশি মুদ্রায় উচ্চ ঋণ থাকা দেশগুলোকে তাদের দুর্বলতা খুঁজে বের করা উচিত।
এছাড়া, সরকারগুলো ধীরে ধীরে কর বৃদ্ধি, পেনশন ও ভর্তুকি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে আর্থিক সংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।