কাজাখস্তানে বিক্ষোভকারীদের দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ

ফানাম নিউজ
  ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৫১

কাজাখস্তানে তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীকে কোনো ধরনের সতর্কীকরণ ছাড়াই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির কাসিম-জোমার্ট টোকায়েভ। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভকারীদের দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, দেশের মূল নগরী আলমাতিতে হামলা চালিয়েছে ‘২০ হাজারের মতো দস্যু’। তারা রাষ্ট্রের সম্পত্তি ধ্বংস করছে। কাজাখস্তানে শুরু হওয়া বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল এই আলমাতি নগরী। ‘দস্যু-সন্ত্রাসীরা’ এই বিক্ষোভ-সংঘর্ষের মূল হোতা বলে অভিযোগ করেন তিনি।

টিভি ভাষণে প্রেসিডেন্ট টোকায়েভ বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা এখনো তাদের অস্ত্র জমা দেয়নি। তারা অপরাধ করেই যাচ্ছে কিংবা এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এর ইতি টানতে হবে। যে আত্মসমর্পণ করবে না তাকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ও সেনাবাহিনীকে কোনো সতর্ক করা ছাড়াই গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছি।’

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় দেশটিতে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভের জেরে সরকারের পতন ঘটে গত বুধবার (৫ জানুয়ারি)। প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট টোকায়েভ দেশটির প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করেন। একই সঙ্গে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

সহিংস আন্দোলনের মধ্যে আলমাতি শহরের রাস্তায় পুড়িয়ে দেওয়া হয় বহু যানবাহন, আগুন দেওয়া হয়েছে সরকারি ভবনগুলোতে, প্রেসিডেন্টের আবাসিক ভবনের আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় বুলেটের খোসা। ঘটে লুটপাটের ঘটনাও।

সহিংসতার ঘটনা অব্যাহত থাকে বৃহস্পতিবারও। দেশটির বেশিরভাগ এলাকা পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেয় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলমাতির প্রধান চত্বরে আবারও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ব্যাপক ধরপাকড় চলে দিনভর। সহিংসতার জেরে দেশজুড়ে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয় ইন্টারনেট সংযোগ। দেশটির স্বাধীনতার ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রায় এক সপ্তাহের বিক্ষোভে দেশটির সাধারণ নাগরিক ও পুলিশসহ কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, সপ্তাহ শেষে ২৬ ‘সশস্ত্র অপরাধী’ এবং ১৮ জন পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ড সার্ভিসের সদস্য নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আটক হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি।