শিরোনাম
মার্কিন রাজনীতিতে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। খুব শিগগিরই ভেঙে পড়তে পারে। এমনকি আগামী এক দশকের মধ্যে একনায়কের কবলে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
এমনটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কানাডীয় এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। এক নিবন্ধে টমাস হোমার ডিক্সন নামের ওই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ‘মার্কিন গণতন্ত্রের পতন’ হতে পারে। ২০৩০ সাল নাগাদ পুরোপুরি স্বৈরশাসন।
এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোও আক্রান্ত হাতে পারে এই স্বৈরতন্ত্র দিয়ে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন গণতন্ত্রের এই পতনে প্রভাবমুক্ত থাকতে নিজ দেশের জনগণ ও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, কানাডাকে অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীন হুমকির মুখে গণতন্ত্র। রিপোর্ট বলছে, দেশটিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত সুইডেনের স্টকহোমভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল অ্যাসিসট্যান্স’র (আইডিইএ) ‘গ্লোবাল স্টেট অব ডেমোক্রেসি ২০২১’ রিপোর্টে প্রথমবারের মতো ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের দেশগুলোর তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রাচীন গণতন্ত্র হিসাবে পরিচিত দেশটির নাম।
মার্কিন নেতারাও বিষয়টি স্বীকার করছেন। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচনে হারলেও ফলাফল মেনে নেননি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক নেতাকর্মীই।
সংঘাত ও বিশৃঙ্খলার মধ্যেই গত বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন জো বাইডেন। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন রাজনীতি ও গণতন্ত্র নিয়ে প্রায়ই সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা।
সর্বশেষ হুঁশিয়ারি দিলেন টমসা হোমার ডিক্সন। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় রয়্যাল রোডস ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক তিনি।
সেই সঙ্গে রয়্যাল রোডস ইউনিভার্সিটির ক্যাসকেড ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকও। শুক্রবার কানাডার জনপ্রিয় দৈনিক দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল-এ দ্য আমেরিকান পলিটি ইজ ক্র্যাকড, অ্যান্ড মাইট কলাপস, কানাডা মাস্ট প্রিপেয়ার শিরোনামে তার একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
নিবন্ধের শুরুতেই এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যেই মার্কিন গণতন্ত্র ভেঙে পড়তে পারে।
ফলে দেশের মধ্যে ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সংঘাত ও সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে। আর ২০৩০ সালের মধ্যেই ডানপন্থি একনায়কের হাতে শাসিত হতে পারে দেশটি।’
এরপর তিনি বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে এই কথাগুলো হাস্যকর ও অপ্রীতিকর বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এমন সম্ভাবনা আমাদের অবশ্যই উড়িয়ে দেওয়া উচিত হবে না।’ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার জনতুষ্টিবাদের (পপুলিজম) রাজনীতি নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী টমাস বলেন, আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন এমন বক্তব্যও অনেকের কাছে অ্যাবসার্ড বা অযৌক্তিক মনে হতে পারে।
তবে বর্তমানে আমরা এমন একটা বিশ্বে বাস করছি যেখানে অ্যাবসার্ড বিষয়গুলোই হরহামেশাই বাস্তব হয়ে উঠছে।’ এর আগে সাবেক এক মার্কিন জেনারেল প্রায়ই একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
পল এইটোন নামে এক মেজর জেনারেল বলেছেন, আসন্ন ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হলে সামরিক অভ্যুত্থানের মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
এনপিআরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সতর্ক করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের পর কে কমান্ডার ইন চিফ হবেন-এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবির মুখে সামরিক বাহিনী অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে এবং তখন সামরিক অভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে।
এদিকে এক জরিপে উঠেছে, গণতন্ত্র নিয়ে এখনও ভীত মার্কিন নাগরিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল হিলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার এক বছর পূরণ হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি)। দিবসটি সামনে রেখে জরিপটি চালানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র নিয়ে আমেরিকানরা এখনও ভীত বলে ফলাফলে উঠে এসেছে। ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও দাঙ্গার বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে রোববার (২ জানুয়ারি) দু’টি জরিপের ফলাফলে এই তথ্য উঠে এসেছে। জরিপ মতে, আবার এক-তৃতীয়াংশ আমেরিকানের দাবি, সরকারের বির্নুদ্ধে এ ধরনের হামলা ও সহিংসতা কখনও কখনও ন্যায়সঙ্গত হতে পারে। এক বছর আগে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতার মেয়াদের একেবারে শেষ দিকে ট্রাম্পের উসকানিতেই তার সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায়।
২০ বছরে যুদ্ধে ১৪ লাখ কোটি খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র : ‘সন্ত্রসবিরোধী যুদ্ধ’ ঘোষণার পর গত দুই দশকে আফগানিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ১৪ লাখ কোটি ডলার খরচ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন।
পাহাড় সমান এই অর্থের এক তৃতীয়াংশ বা অর্ধেকই গেছে অস্ত্র নির্মাতা, ব্যবসায়ী ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পকেটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক রিপোর্টে এ সম্পর্কিত তথ্য বিস্তারিত উঠে এসেছে।
২০০১ সালে টুইন টাওয়ার হামলার পর বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন।