শিরোনাম
মিয়ানমারে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি আর্ন্তজাতিক বেসরকারি সংস্থা, সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মীকে হত্যা করেছে দেশটির সেনা সদস্যরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। দেশটিতে দ্বন্দ্ব সংঘাতে বিধ্বস্ত কায়া রাজ্যে জান্তা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশুসহ ৩৫ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ আসার পরপরই সংস্থাটি তাদের কর্মী নিখোঁজের বিষয়টি জানিয়েছিল। পরে তারা নিশ্চিত হয় ওই হত্যাকাণ্ডে নিহত হয়েছেন নিখোঁজ ওই দুই কর্মী। খবর বিবিসির
সংস্থাটি জানিয়েছে, মিয়ানমার সৈন্যরা তাদের গাড়ি রোধ করে তাদের আটক করে। এরপর হত্যাকাণ্ড চালানোর পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই হত্যাকাণ্ডে নিহত হয়েছেন নারী ও শিশুরাও।
তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন আরও জানায়, তাদের ওই দুই কর্মী নতুন কাজে যোগ দিয়েছেন। তারা বাচ্চাদের শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেদিন কাজ সেরে তারা ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন।
এক টুইট বার্তায় সংস্থাটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে বিষয়টি নজরে আনার এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এ ঘটনার জন্য মিয়ানমার সামরিক বাহিনীকে দায় নিতে হবে। তিনি দেশটির সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে সেভ দ্য চিলড্রেন এক বিবৃতিতে জানায়, মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্যে সহিংসতায় নারী-শিশুসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। একই সময়ে তাদের দুইজন কর্মীকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা নিশ্চিত হতে পেরেছে যে তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে হামলা করা হয়েছে এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকায় তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এ সহিংসতার ঘটনার পর মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে জানায়, সেনাবাহিনী ওই গ্রামে বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকজন ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’কে গুলি করে হত্যা করেছে। এতে আরও বলা হয়, অস্ত্রধারীরা সাতটি গাড়িতে ছিলেন এবং সামরিক বাহিনীর নির্দেশের পরও তারা থামেননি।
কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স হচ্ছে সামরিক জান্তা বিরোধিতাকারী বেশ কয়েকটি বেসামরিক মিলিশিয়ার মধ্যে অন্যতম। ফোর্সটির দাবি নিহতরা তাদের দলের সদস্য নয়। বরং সাধারণ মানুষ। তাদের একজন কমান্ডার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমন হত্যাকাণ্ডে আমরা হতবাক। কারণ মরদেহগুলো শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা। স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভূত্থানের পর সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৩শর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে, দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সূচি ১১ মাস ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুনীর্তি ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারের আদালতে চলছে বিচার কার্যক্রম।