শিরোনাম
নতুন বছরের শুরুটা হয়তো খুব একটা সুখকর হচ্ছে না ভারতের সাধারণ মানুষের জন্য। ২০২২ সালের প্রথম দিন থেকেই দেশটিতে গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্সের (জিএসটি) কয়েকটি ধারা বদলে যাচ্ছে। নতুন নিয়মে ই-কমার্স অপারেটররা গণপরিবহন ও রেস্তোরাঁভিত্তিক সেবা কার্যক্রম চালালে তাদের বাড়তি কর দিতে হবে। এর পাশাপাশি জুতা এবং তাঁতশিল্পেও ইনভার্টেড শুল্ক কাঠামো পরিবর্তন করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব নীতি পরিবর্তনের কথা জানিয়েছিল। নতুন নিয়ম অনুসারে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে যেকোনো দামের জুতায় ১২ শতাংশ জিএসটি দিতে হবে। তুলা ছাড়া অন্য যেকোনো উপাদানে তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রেও একই হারে জিএসটি লাগবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জিএসটি নীতি পরিবর্তনের ফলে নতুন বছরের শুরু থেকেই ভারতে তৈরি পোশাক ও জুতার দাম বাড়তে পারে। বর্তমানে দেশটিতে জুতার ওপর ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়। নতুন বছরে তা আরও ৭ শতাংশ বাড়বে। তুলা ছাড়া অন্য উপাদানে তৈরি পোশাকেও এখন পর্যন্ত ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হচ্ছে। নতুন বছরে এর হার ১২ শতাংশ হয়ে যাবে।
ভারতের বড় শহরগুলোতে অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠেছে ওলা, উবারের মতো অ্যাপনির্ভর পরিবহনসেবা। নতুন জিএসটি নীতিতে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যদি যাত্রীসেবা দেওয়া হয়, তাহলে ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হবে। তবে অফলাইন বা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যাত্রীবহন করলে কোনো জিএসটি থাকবে না।
আগামী বছর সুইগি-জোম্যাটোর মতো অনলাইনভিত্তিক ফুড ডেলিভারি স্টার্টআপগুলোও তাদের সেবার ওপর জিএসটি সংগ্রহ করবে। পরে সেই কর তারা জমা দেবে সরকারের কাছে।
শুরু থেকেই ভারত সরকারের এই জিএসটি নীতি পরিবর্তনের বিরোধিতা করছে নানা মহল। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জিএসটি’র হার পরিবর্তনের ফলে অন্তত দেড় কোটি চাকরির সুযোগ নষ্ট হবে। দেশটির তুলা খাতে এরই মধ্যে ৭০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
ভারত সরকারের আশা, জিএসটি’র হার পরিবর্তনের ফলে বাড়তি সাত হাজার কোটি রুপি কর পাওয়া যাবে। তবে অমিত মিত্রের দাবি, সরকারের এই আশা কখনোই পূরণ হবে না। বরং পণ্য ও সেবার ওপর কর বাড়লে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা না করেই কর নীতি পরিবর্তন করেছে বলে অভিযোগ এ অর্থনীতিবিদের।
সূত্র: মিন্ট, দ্য ওয়াল