শিরোনাম
অমিক্রন করোনার অন্য ধরনগুলোর চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক—এমন কথা প্রথম থেকেই বলছিলেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি বলা হচ্ছিল, অমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে তুলনামূলক কম জটিলতা দেখা দেয়। এবার একই তথ্য উঠে এলো যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায়। গবেষণা বলছে, অন্য ধরনগুলোর তুলনায় অমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কম।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, অমিক্রন নিয়ে গবেষণাটি চালিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকারি সংস্থা হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি (ইউকেএইচএসএ)। নভেম্বরের শুরু থেকে যুক্তরাজ্যে অমিক্রন ও ডেলটা ধরনে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। আমলে নেওয়া হয়েছে দেশটিতে অমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৩২ জনকেও।
তবে অমিক্রনের জেরে শারীরিক জটিলতা নিয়ে সুখবর শোনালেও, নেতিবাচক তথ্যও উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের এ গবেষণায়। গবেষণা বলছে, টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার ১০ সপ্তাহ পর থেকেই শরীরে অমিক্রনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার মাত্রা কমতে থাকে। আর ধরনটি অত্যাধিক সংক্রামক হওয়ার কারণে হাসপাতালগুলোর ওপর আসতে বিশাল সংখ্যক রোগীর চাপ।
অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বয়স্কদের নিয়েও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন পর্যন্ত যাঁরা অমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগের বয়স চল্লিশের নিচে। ধরনটিতে বৃদ্ধরা আক্রান্ত হওয়া শুরু করলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইউকেএইচএসএর প্রধান নির্বাহী ডা. জেনি হ্যারিস বলেন, সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার অন্য ধরনগুলোতে আক্রান্তদের চেয়ে অমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম। এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে রোগী শনাক্তের হার আকাশ ছোঁয়া। এ কারণে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কম থাকলেও, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
এর আগে লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, অমিক্রন ধরনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে থাকার ঝুঁকি ডেলটায় আক্রান্তদের তুলনায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ কম। যুক্তরাজ্যে ১ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পাওয়া পিসিআর টেস্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানান, গবেষণা চলাকালে বিভিন্ন তথ্যের গড় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তাঁরা দেখেছেন, ডেলটার তুলনায় অমিক্রনে সংক্রমিত হলে হাসপাতালে থাকার ঝুঁকি কম থাকে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের নতুন রেকর্ড গড়েছে যুক্তরাজ্য। গতকাল বুধবারই যুক্তরাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছিল। সেদিন আক্রান্ত হন ১ লাখ ৬ হাজার ১২২ জন। এরপর বৃহস্পতিবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৯ জন।