‘আসছে আরেকটি ঝড়’

ফানাম নিউজ
  ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০১

করোনার অতিসংক্রামক ধরন অমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপজুড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইউরোপীয় অঞ্চলের ৫৩ দেশের মধ্যে কমপক্ষে ৩৮টি দেশে ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। এ অঞ্চলের করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলোতে সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন বিধিনিষেধ ফিরছে।

বিবিসি বলছে, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে যুক্তরাজ্য ও স্পেনে। ফ্রান্সের আশঙ্কা, খুব শিগগির দিনে সংক্রমণ ১ লাখ ছাড়াবে। ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ার ভিরান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দেশটিতে এই মুহূর্তে দিনে ৭০ হাজারের মতো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এর পেছনে অমিক্রন দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী জানুয়ারির শুরুর দিকে এর আরও বিস্তার ঘটতে পারে।

 ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইউ) প্রকাশিত সর্বশেষ হিসাব, মহামারি শুরুর পর থেকে ইউরোপে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের।

ফ্রান্সে করোনার সংক্রমণ যখন বেড়ে যাচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দেশটিতে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে বলা হয়েছে, আপাতত ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে না।

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে বিধিনিষেধ ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি। ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১০ জনের বেশি লোক ব্যক্তিগত কাজে একত্র হতে পারবেন না। বন্ধ থাকবে নৈশক্লাবগুলো। একই দিন থেকে ফুটবল খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত থাকতে পারবেন না দর্শকেরা।

এর এক দিন আগে ২৬ ডিসেম্বর থেকে পর্তুগালের পানশালা ও নৈশক্লাবগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই দিন থেকে জানুয়ারির ৯ তারিখ পর্যন্ত বাধ্যতামূলকভাবে বাসা থেকে কাজকর্ম করতে হবে। বাসার বাইরে ১০ জনের বেশি মানুষ জড়ো হওয়ার ওপরও থাকছে নিষেধাজ্ঞা।

ফিনল্যান্ডের পানশালা ও রেস্তোরাঁগুলো ২৪ ডিসেম্বর থেকে রাত ১০টায় বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরে ২৮ ডিসেম্বর থেকে তিন সপ্তাহ রেস্তোরাঁগুলো রাত ৮টায় বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি আসন সীমিত রাখার বিধিনিষেধও দেওয়া হয়েছে।

বড়দিনের আগে ইংল্যান্ডে নতুন কোনো বিধিনিষেধ জারির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড সামাজিক মেলামেশা ঠেকাতে ব্যবস্থা নিয়েছে।

বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে সুইডেন সরকারও। গতকাল থেকে দেশটির পানশালা, ক্যাফে ও রেস্তোরাঁগুলোর ওপরও নতুন নির্দেশনা এসেছে। এর মধ্যে গত সোমবার কঠোর লকডাউন শুরু করেছে নেদারল্যান্ডস।

এদিকে ইউরোপের অনেক দেশই এখনো করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিধিনিষেধ জারি করেনি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ক্রিসমাস উত্সব শেষে নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটবে বাকি দেশগুলোও।

অমিক্রন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হ্যানস ক্লুগে বলছেন, ইউরোপজুড়ে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি এ অঞ্চলের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। তাঁর ভাষ্য, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরেকটি ঝড় আসছে।

এদিকে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার একাধিক টুইট করেন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তিনি লেখেন, ‘আমরা মহামারির সবচেয়ে খারাপ অংশে প্রবেশ করতে পারি।’