শিরোনাম
ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন ‘রাই’-র আঘাতে মৃত্যু প্রায় ৪০০ জনের কাছাকাছি। ঘূর্ণিঝড়ের সময় দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০০ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। দেশটির আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পূর্বের অনুমানকে ছাড়িয়ে গেছে সুপার টাইফুন রাই। প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) ফিলিপাইনের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রাই। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের পর অঞ্চলটিতে বহু গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যায়। প্লাবিত হয় বহু গ্রাম। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বহু এলাকা। টাইফুনের আঘাতে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসব সবকিছুই বিধ্বস্ত হয়েছে।
দুর্যোগকবলিত এলাকায় এখনো উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন পুলিশের সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। কয়েক হাজার সংশ্লিষ্ট সদস্য উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের নেতিবাচক প্রভাব কতটা হতে পারে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সংস্থার তথ্যমতে, তাপমাত্রার বৃদ্ধির ফলে গত চার দশকে এর ক্ষতিকর প্রভাব বেড়েছে কয়েকগুণ।
রাই-র তাণ্ডবের আগে দেশটির আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, প্রতি ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার বেগে একটি ঝড় বয়ে যেতে পারে, যেটি উল্লেখ্যযোগ্যভাবে ক্ষতিসাধন করার ক্ষমতা রাখে।
জানা গেছে, সুপার টাইফুন রাই ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সুরিগাঁওয়ের স্থলভাগে আছড়ে পড়ে। এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার।
নিকোস পেনারান্ডা, যিনি বজ্রপাত নিয়ে ফিলিপাইনের জাতীয় আবহাওয়া ব্যুরোতে গবেষণা করেন তিনি বলেন, কিন্তু পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলেছে। আমাদের ধারণাকে অতিক্রম করে গেছে রাই।
সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূণিঝড় রাই, পাঁচ নম্বর সুপার টাইফুনের ক্যাটাগরিতে পড়ে। একে তুলনা করা যেতে পারে যখন একটি যাত্রীবাহী বিমান মাটি থেকে উঠতে শুরু করে একই গতির সঙ্গে।
গত আগস্টে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যায় হারিকেন আইডা। এটি ঝড়ের চার নম্বর ক্যাটাগরিতে পড়ে।
বেলজিয়ামের লুভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত অনুয়ায়ী, গত তিন দশকে ফিলিপাইনে অন্তত ২০৫টি সাইক্লোনের রেকর্ড আছে, যা এশিয়ার অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে সর্বোচ্চ। এতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে চীন, যেখানে ১৩৯টি সাইক্লোনের মুখোমুখি হয়েছে মানুষ এবং বাংলাদেশে ৪২টি।
সূত্র: রয়টার্স