শিরোনাম
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) নজরদারি এলাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে। শনিবার পাঞ্জাব রাজ্য সরকার এ মামলা করে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান জানতে চার সপ্তাহের সময় দিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম রাজ্যে বিএসএফকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়ে জানায়, এখন থেকে নিজেদের সীমানার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও জব্দ করার ক্ষমতা পাবেন বিএসএফের কর্মকর্তারা। আগে বিএসএফের নজরদারির এ আওতা ছিল ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত।
পাঞ্জাব সরকারের মামলার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান জানানোর জন্য নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট সরকারের অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। চার সপ্তাহ পর এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে এ তিনটি রাজ্যে সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার এলাকায় বিএসএফের নজরদারির ক্ষমতা ছিল। কিন্তু ভারত সরকার সেই নজরদারির এলাকা ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। পাঞ্জাবের কংগ্রেসদলীয় মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ চান্নির সরকার এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
এর আগে অবশ্য পাঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় বিএসএফের নজরদারির এলাকা বৃদ্ধির আদেশ প্রত্যাহার করার দাবিতে প্রস্তাব পাস হয়েছে। তবে বিজেপিদলীয় আসাম রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ না করে বরং বিএসএফের নজরদারি এলাকা বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে।
পাঞ্জাব সরকার বলছে, সীমান্ত এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব স্ব স্ব রাজ্য সরকারের, বিএসএফের নয়। শুধু সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব বিএসএফের। পাঞ্জাব সরকারের বিএসএফের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পাঞ্জাবের কংগ্রেসদলীয় রাজ্য সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধু।
গত ১৬ নভেম্বর রাজ্যে বিএসএফের নজরদারি বাড়াতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে খারিজ করা হয়।
এত দিন সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নজরদারি করতে পারত বিএসএফ। গত ১১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই এলাকা ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান। প্রস্তাবটি প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লেখেন।
তবে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বিএসএফের নজরদারি এলাকা বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান নেন বিজেপির বিধায়কেরা। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, ‘সীমান্তে সন্ত্রাস, চোরাচালান, অনুপ্রবেশ বন্ধে এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলছি, বিএসএফের নজরদারি এলাকা ৫০ নয়, ৮০ কিলোমিটার করা হোক।’