শিরোনাম
ইউক্রেন সীমান্তে যখন রাশিয়া সেনা সমাবেশ করছে এবং এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে, তখন ছয় কোটি মার্কিন ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের কাছে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।
গত বৃহস্পতিবার এসব অস্ত্রশস্ত্র ইউক্রেনে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা। তবে আগামী বছরের শুরুতে আরও চারটি কাউন্টার মর্টার রাডারসহ অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করার কথা রয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ১ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কির হোয়াইট হাউস সফরের সময় এই নিরাপত্তা প্যাকেজের অনুমোদন দেন।
গত বুধবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জিন কিরবি বলেন, নিরাপত্তা সহায়তা কর্মসূচির আওতায় অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো প্রাণঘাতী উপাদানের পাশাপাশি অন্য অস্ত্রশস্ত্রও রয়েছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ করে সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সমাবেশ ঘটানোর বিষয়টি লক্ষ্য করে এই নিরাপত্তা প্যাকেজের অনুমোদন দেওয়ার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সমাবেশের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বাইডেন।
গত মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে পুতিনকে এই হুমকি দেন তিনি। একই সুর ইউরোপের দেশগুলোর কণ্ঠেও।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সতর্ক করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে দেশটিকে ভয়ানক মূল্য দিতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত শনিবার বাইডেন এসব কথা জানান।
বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি পুতিনকে এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায়, তাহলে দেশটিকে ভয়ানক মূল্য দিতে হবে। দেশটিকে বিধ্বংসী অর্থনৈতিক পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।
গত সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা ভার্চ্যুয়ালি কথা বলেন বাইডেন। ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে দুই নেতার মধ্যে এই আলাপ হয়।
এই আলাপ সম্পর্কে বাইডেন বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একেবারে পরিষ্কার করে দিয়েছি...তিনি যদি ইউক্রেনের দিকে অগ্রসর হন, তাঁর দেশের অর্থনীতির জন্য পরিণতি হবে বিধ্বংসী।’
বাইডেন আরও বলেন, তিনি রুশ নেতাকে স্পষ্টভাবে বলেছেন যে ইউক্রেনে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে বিশ্বে রাশিয়ার অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হবে। রাশিয়ার সম্ভাব্য আক্রমণের ক্ষেত্রে ইউক্রেনে মার্কিন স্থলসেনা পাঠানোর সম্ভাবনা কখনোই আলোচনায় ছিল না।
ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে সীমান্ত এলাকায় রাশিয়া বিপুলসংখ্যক সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ কিয়েভের। এদিকে এএফপির খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রও একই অভিযোগ করেছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ বলেছেন, মস্কো জানুয়ারির শেষে সামরিক হামলার পরিকল্পনা করে থাকতে পারে। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে আগাম হামলা চালানোর ইচ্ছা মস্কোর নেই।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন ঠেকানোর অঙ্গীকার করেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন রাশিয়ার জন্য খুব কঠিন করে তুলবেন তিনি। একই সঙ্গে ইউক্রেনে হামলা করলে রাশিয়াকে মূল্য দিতে হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন জি-৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।