শিরোনাম
দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি এড়াতে আফগানিস্তানের স্থগিত করা তহবিল থেকে জাতিসংঘের দুটি সংস্থার জন্য ২৮ কোটি মার্কিন ডলার স্থানান্তর করতে রাজি হয়েছে আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠী। দেশটির স্বাস্থ্যখাতের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের ফান্ড থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার পাবে ডব্লিউএফপি ও ১ কোটি মার্কিন ডলার পাবে ইউনিসেফ। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ব ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এ তথ্য।
বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আফগানিস্তানের মানুষের স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট ও পুষ্টিজাত খাদ্য সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠী আটকে রাখা তহবিলের মধ্যে ২৮ কোটি মার্কিন ডলার স্থানান্তরে সম্মত হয়েছে। দেশটির অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়া ও দুর্ভিক্ষের শঙ্কার কারণে এ অর্থ ছাড়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি বছর ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলে নেয়। ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র রাষ্ট্রগুলো আফগানিস্তান থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর সরকার গঠন করে তালেবান। চরম অনিশ্চয়তা আর রাজনৈতিক গোলযোগের মাঝে বন্ধ হয়ে যায় আফগানিস্তানের অর্থ ছাড়ের তহবিল।
আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠন করলেও এখনও মিলেনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। দেশটির ৯ বিলিয়নের বেশি রিজার্ভ মুদ্রা আটকে আছে বিদেশে। আবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংক আফগানিস্তানকে তাদের তহবিল থেকে অর্থ উত্তোলন করতে দিতেও নারাজ। ফলে চরম বিপাকে পড়েছে দেশটি।
জাতিসংঘ সতর্ক করছে যে দেশটির ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ যা মোট জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ, চরম ক্ষুধামন্দার মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে শীতকালে দুর্ভিক্ষ ঝুঁকিতে রয়েছে আফগানিস্তানের ৯০ লাখ মানুষ।
আফগানিস্তানে তালেবানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রবাহিনীর ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধ শেষ হলো এ বছর। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, হয়তো আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হবে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর সরকার গঠন হলেও আদৌতে কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ছে না। দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার তো সম্ভব হচ্ছে না, একই সঙ্গে পিছিয়ে পড়েছে অন্যান্য সামাজিক ইস্যুতেও। দেশটির সাধারণ মানুষের খাদ্যাভাবে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় বিক্রি করার খবরও মিলেছে। অর্থাভাবে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যখাত। নেই আফগানদের সামাজিক নিরাপত্তাও।
সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি