শিরোনাম
করোনা মহামারির শুরু থেকেই স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষাখাত। দেশে দেশে মাসের পর মাস বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। তবে টিকাকরণের মাধ্যমে উন্নত দেশগুলো শিক্ষার দুয়ার খোলার চেষ্টা ও পরিকল্পনা করছে। কিন্তু এরই মধ্যে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হানা দিয়েছে। ফলে আবারও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আশা ভঙ্গ হতে চলেছে।
গত ১ ডিসেম্বরের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দুয়ার খোলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু দেশটিতে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সে পরিকল্পনা পিছিয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা কবে যেতে পারবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।
করোনা মহামারির কারণে প্রায় ২০ মাস বন্ধ ছিল অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত। ভারতের গুরগাঁওয়ের ১৮ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য অস্ট্রেলিয়াকে বেছে নেওয়া জন্য এখন অনুশোচনায় ভুগছেন। চরম হতাশায় দিন কাটছে তার।
ডিসেম্বরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ায় উড়াল দেওয়া পরিকল্পনা ছিল জুটশির। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ৭ জনের দেহে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। তাই দেশটির সীমান্ত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ওপর ভরসার রাখতে পারছেন না জুটশি। কারণ এ সময়সীমা অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ আরও বাড়াতে পারে। জুটশি জানান, যদি তারা পুরো ডিসেম্বর মাস সীমান্ত বন্ধ রাখে তাহলে সেটা হবে হতাশাজনক।
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানে অধ্যয়নরত জুটশি বলেন, আমার অনেক বন্ধু ছিল যাদের এই সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার জন্য নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে।
জুটশি প্রায় এক লাখ আন্তর্জাতিক ছাত্রের মধ্যে একজন। তারা সবাই ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশটির সীমান্ত বন্ধ করার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের জন্য মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ তাদের পড়াশোনা পিছিয়ে দিয়েছে, অন্যরা অনলাইনে পড়াশুনা করেছে। ওমিক্রনের কারণে সীমান্ত খোলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ, হতাশা এবং ক্ষোভ বাড়ছে।
চীনের শিক্ষার্থী কারেন গান। তিনি চীনের নানিং শহরে তার বাড়ি থেকে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় অনলাইনে পড়াশোনা করছেন। বার বার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করায় তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের উপর আস্থা হারিয়েছেন।
মহামারির আগে অস্ট্রেলিয়া ছিল শিক্ষার জন্য বিশ্বের তৃতীয়-জনপ্রিয় গন্তব্য। ২০১৯ সালে দেশটির শিক্ষাখাত অর্থনীতিতে ৩৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার অবদান রেখেছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে দুই লাখ ২৪ হাজার। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সব কিছুই স্থবির হয়ে পড়েছে।