শিরোনাম
সম্প্রতি বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে। আর এর প্রভাব পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। বিভিন্ন দেশের সরকার তেলের ওপর ভর্তুকি কমিয়ে সামঞ্জস্য করার চেষ্টা করছে। এতে বিপাকে পড়েছে সংশ্লিষ্ট দেশের দরিদ্র লোকজন।
এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের সহায়তা করতে আফ্রিকার দরিদ্র দেশ নাইজেরিয়া অসাধারণ এক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ভর্তুকি কমিয়ে নাইজেরিয়ার সরকার দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রায় ছয়শ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তথ্যানুযায়ী, নাইজেরিয়া সরকার প্রত্যেক দরিদ্রকে পাঁচ হাজার নাইরা (নাইজেরিয়ার মুদ্রার নাম) দেবে। দেশটির মোট জনসংখ্যা ২০ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। প্রতি মাসে এই ৪ কোটি মানুষকে নগদ অর্থ দেবে সরকার।
আগামী বছরের জুলাই থেকে দেশটিতে ভতুর্কি দেওয়া বন্ধ হবে। তারপর থেকেই ছয় মাস অথবা এক বছরের মধ্যে সরকার এ অর্থ দেবে। দেশটির নতুন আইন অনুযায়ী, সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পেট্রলের দাম নির্ধারণ করার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়। দেশটির অর্থমন্ত্রী জয়নব আহমেদ এ তথ্য জানান।
এমন এক সময় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নগদ অর্থ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে যখন দেশটির ৩০টি রাজ্যে গভর্নর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারী তার দলের নেতাদের সুবিধাজনক অবস্থানে রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশটির সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন রাজস্ব বাড়বে অন্যদিকে ২০২৩ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের দলের প্রতি জনগণের সমর্থন জোরদার হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া বলছে, সরকারের কাছ থেকে উপকার পাওয়া জনগোষ্ঠী বুহারীকেই ভোট দেবে।
দেশের বাজেট এবং আর্থিক বোঝার দায় আর বহন করতে পারছে না বলেই জ্বালানিতে ভর্তুকি বাতিল করতে চাচ্ছে নাইজেরিয়া। জ্বালানিতে ভর্তুকির ফলে এ বছর বাজেটে ৬ দশমিক তিন শতাংশ ঘাটতি দেখা দেবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির সরকার বর্তমানে জ্বালানিখাতে প্রতি মাসে ২৫০ বিলিয়ন নাইরা ভর্তুকি দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল দেশটিতে ভর্তুকি কমিয়ে সামাজিক সহযোগিতামূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার সুপারিশ দিয়েছে। ভর্তুকি কমালেও যাতে দরিদ্র মানুষের ওপর এর প্রভাব না পড়ে।
আফ্রিকার এই জনবহুল দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ চরম দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। দেশটিতে দরিদ্রদের আয় দুই ডলারেরও কম। সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে তাদের আয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।