শিরোনাম
স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ যখন ‘দ্য এনসিয়েন্ট মেরিনার’ কবিতাটি লিখেছিলেন, তখন অষ্টাদশ শতক প্রায় শেষ। ঝড়ের কবলে পড়া অ্যালবাট্রসের সঙ্গে সেই সমুদ্রের নাবিকের প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধজীবনকে তুলে এনেছিলেন কোলরিজ। তিন শতাব্দী আগের সেই অ্যালবাট্রসরা এখন একা হতে চলেছে। উষ্ণতার ধকলে অতিষ্ঠ হয়ে ‘ডিভোর্স’ বাড়ছে তাদের পরিবারে। সম্প্রতি এমন তথ্যই প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাজ্য সরকারের বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা সংস্থা দ্য রয়েল সোসাইটির একটি গবেষণাপত্রে। গার্ডিয়ান।
অ্যালবাট্রস একটি সামুদ্রিক দিবাচর পাখি। সাধারণ পাখির তুলনায় আকারে একটু বড় হয়। দক্ষিণ মেরুবলয়ে একটানা একই দিকে দীর্ঘক্ষণ উড়ে বেড়ায়। দুপাশে ডানা প্রসারিত করে এদের দলবদ্ধ নৃত্য দর্শনীয়। গবেষকরা বলছেন, সমুদ্রের পানি উচ্চমাত্রায় গরম হওয়ায় খাবারের খোঁজে এই পাখিগুলোকে যেতে হয় দূর-দূরান্তে, অপেক্ষাকৃত শীতল কোনো জলরাশিতে। আর এ কারণেই সঙ্গীদের সঙ্গে ‘ডিভোর্স’ বাড়ছে বা সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে বলে গবেষকরা মতপ্রকাশ করেন। অস্বাভাবিকভাবে পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ৮ শতাংশ অ্যালবাট্রসের ‘ঘর ভেঙেছে’। গবেষকরা ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ১৫ হাজার ৫০০ প্রজনন জোড়ার দিকে লক্ষ্য করে ১৫ বছরে এ তথ্য উদ্ঘাটন
করেছেন। সামুদ্রিক পাখিগুলোর জন্য পানি গরম হওয়া মানেই কম মাছ, কম খাবার, বেঁচে থাকার জন্য একটি কঠিন পরিবেশ।
এমন পরিবেশে কম ছানাই বেঁচে থাকতে পারে। পাখিগুলোর স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায় এবং তারা শিকারের জন্য বহু দূরে যেতে বাধ্য হয়। নিউজিল্যান্ডের সংরক্ষণ বিভাগের প্রধান বিজ্ঞান উপদেষ্টা ড. গ্রায়েম এলিয়ট বলেন, ‘প্রাণিজগতের সবচেয়ে অনুগত অংশীদারদের একজন হিসাবে, অ্যালবাট্রসদের প্রেমের জীবন দীর্ঘকাল ধরে বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে।’ তিন দশক ধরে এ পাখিটি নিয়ে অধ্যয়ন করা এ গবেষক বলেন, ‘এসব জিনিসকে আমরা সুপার-ডুপার হিউম্যান বলে মনে করি।’ লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং রয়েল সোসাইটির সংশ্লিষ্ট সমীক্ষার সহলেখক ফ্রান্সিসকো ভেনচুরা জানান, গবেষকরা জানতে পেরে অবাক হয়েছিলেন, পানি উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে অ্যালবাট্রস দম্পতির সম্পর্ক বিয়োগের হার ছিল অনেক বেশি। এর জন্য প্রধানত দায়ী ছিল পর্যাপ্ত মাছের অভাব। সূত্র: যুগান্তর