শিরোনাম
ছোট বাচ্চাকে নিয়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি গেছেন, কিন্তু আর ফিরছেন না। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকদের চাপেই স্বামীর সংসারে ফিরতে চাচ্ছেন না ওই নারী। এ কারণে স্ত্রী-সন্তানকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সোজা শ্বশুরবাড়ির সামনে গিয়ে ধরনায় বসে পড়েছেন এক যুবক। গায়ে লাগিয়েছেন ‘আমার বউ ফেরত চাই’ লেখা কাগজও। গত মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) এ ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের মালবাজার এলাকায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের খবর, পিঠে ‘বউ ফেরত’ চাওয়ার কাগজ লাগিয়ে হাতে স্ত্রী-সন্তানের ছবি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আচমকাই শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় বসেন হরিদাস মণ্ডল নামে ওই যুবক। পেশায় রাজমিস্ত্রী সেই যুবক জানান, চার বছর আগে কাঠামবাড়ি এলাকার বাসিন্দা জ্যোৎস্না মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। সংসারে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে, যার বয়স এখন দেড় বছর।
হরিদাসের দাবি, প্রথমদিকে সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু বছরখানেক তাদের সংসারে অশান্তি চলছে। আর তার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
যুবক জানান, সম্প্রতি মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি যান তার স্ত্রী। এরপর শ্বশুরবাড়ির চাপে তিনি আর ফিরতে চাচ্ছেন না। বারবার স্ত্রী-সন্তানকে ফিরিয়ে নিতে গেলেও প্রতিবারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে যুবককে। তাই বাধ্য হয়েই ধরনায় বসেছেন। যতক্ষণ স্ত্রী-সন্তানকে ফিরে না পাবেন, ততক্ষণ ধরনা চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন হরিদাস। এমনকি ‘এর জন্য মরতেও রাজি’ বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে যার জন্য এত কিছু, সেই স্ত্রী জ্যোৎস্না বলছেন ভিন্ন কথা। তার বক্তব্য, আমি কোনোভাবেই হরিদাসের সঙ্গে আর সংসার করতে চাই না। সে আমার ওপর শারীরিক অত্যাচার করে। তার জন্যই আমি বাবার বাড়ি চলে এসেছি। এতে আমার বাবা-মায়ের কোনো দোষ নেই।
জোৎস্না বলেন, হরিদাস আমার বাবার বাড়ি ছিল কিছুদিন। এখানেও আমাকে মারধর করে। এমনকি বাড়িতে মদ্যপান করে আসতো। এমন অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি তার সঙ্গে আর থাকবো না। এখন থেকে মেয়েকে নিয়ে আমি বাবার বাড়িতেই থাকতে চাই। তবে আমার ও মেয়ের খরচ দিতে হবে ওকে।
মঙ্গলবার দুপুরে হরিদাস মণ্ডল শ্বশুরবাড়ির গেটে ধরনায় বসতেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। শরীরে ‘বউ ফেরত’ চাওয়ার কাগজ লাগিয়ে ধরনায় বসা যুবককে দেখতে ভিড় জমে যায় সেখানে।
জানা গেছে, প্রচণ্ড শীতের মধ্যে মধ্যরাত পর্যন্ত ধরনায় বসেছিলেন হরিদাস। এরপর পুলিশ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের আশ্বাসে গভীর রাতে ধরনা তুলে নেন তিনি।