শিরোনাম
নগর সংস্থার ভোট যতই ঘনিয়ে আসছে ত্রিপুরা রাজ্যের পরিস্থিতি ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রোববার (২১ নভেম্বর) দিনভর উত্তেজনামূলক পরিস্থিতির পর রাতেও আগরতলার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বাছাই করে তাদের কর্মীদের ওপর একের পর এক হামলা চালানো হয়।
রাতে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছে এক সংবাদকর্মীকেও। বিজেপি অবশ্য এই ঘটনাগুলোকে প্রায় উহ্য রেখে তড়িঘড়ি করে রোববার রাত ১১টার পর এক সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে তারা তৃণমূল কংগ্রেসকেই দোষারোপ করেছে। বিজেপি বলছে, ছায়াজোট করে রাজ্যকে বদনাম করার জন্যই এ ধরনের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে কংগ্রেস, তাদের লক্ষ্য ভোট জেতা নয়।
দলের মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য রোববারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এখানে নেই। উল্টো পশ্চিমবাংলা থেকে ভাড়াটে কিছু গুণ্ডাবাহিনী এনে এই রাজ্যের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলতে চাইছে তারা (তৃণমূল কংগ্রেস)। এক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেফতারও করা হয়েছে ২৪ জনকে।
একই সংবাদ সম্মেলন থেকে রাজ্য সরকারের শিক্ষা ও আইন দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ তৃণমূলকে সামাজিকভাবে বয়কট করার জন্য রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ভুয়া রেকর্ডিং ছেড়ে দিয়ে কিংবা ভুয়া ভিডিও ছেড়ে দিয়ে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। নানা সময়ে উত্তেজনামূলক মন্তব্য করে উসকে দিচ্ছে জনগণকে। তাদের আইটি সেল থেকে এই গোটা ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। রাজ্যে যেখানে তাদের কোনো সংগঠনই গড়ে উঠেনি সেখানে ভোট জেতার কোনো প্রশ্নই নেই। তাছাড়া এই রাজ্যে ভোটের লড়াই লড়তে আসেওনি তারা। এসেছে শুধুমাত্র রাজ্যকে বদনাম করার জন্য।
মন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবাংলার একজন সংসদ সদস্য হয়ে সুস্মিতা দেব যেভাবে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলছেন ‘নপুংসক’ তা সত্যিই নিন্দনীয়। আপত্তিকর এমন মন্তব্য তাদের অনেক নেতারাই ব্যবহার করতে দ্বিধাবোধ করেন না ত্রিপুরায় এসে। ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্য যেখানে পশ্চিমবাংলার মতো রাজ্য থেকে সংস্কৃতির আমদানি করতো সেখানে বর্তমান সময়ে সে রাজ্যের সংস্কৃতিই বা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, ভাবা যায় না। সেখানকার একজন মন্ত্রী রাজ্যে এসে বলছেন, ‘এখানে একজনকে মারা হলে সেখানে নাকি পাঁচজনকে মারা হবে। এ কেমন কথা?’
মন্ত্রীর কথায়, গত মাস ক’য়েক ধরে রাজ্যের পরিস্থিতিকে একপ্রকার উত্তপ্ত করতে গিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরনের ঘটনা সংঘটিত করেছে তারা (তৃণমূল কংগ্রেস)। এই ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দিতে সোমবার তারা আবার দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহ’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলেও জানা গেছে।
ছায়াজোট নিয়ে তিনি বলেন, সিপিআইএম সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের যে ছায়াজোট রয়েছে তা বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলোর দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায়। যেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী রয়েছেন সেখানেই প্রার্থী নেই সিপিআইএমের। আবার যেখানে সিপিআইএমের প্রার্থী রয়েছে সেখানে প্রার্থী নেই তৃণমূল কংগ্রেসের।