শিরোনাম
গত সপ্তাহে বিয়ে করেছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই। বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলের শিকার হয়েছেন এই পাকিস্তানি নারী অধিকারকর্মী। সূত্র: বিবিসি
আলোচনা-সমালোচনার পর মালালা জানালেন বিয়ে নিয়ে তার মধ্যে উদ্বেগ কাজ করত। এক সাক্ষাৎকারে ২৪ বছর বয়সি এ তরুণী বলেন, বিয়ে নিয়ে আমার মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ কাজ করত। কারণ বহু দেশে আমি দেখেছি— অল্প বয়সে বিয়ের পর কিশোরী-তরুণীদের সংসার ভেঙে যায়। সংসারে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে না।
তবে স্বামী আসের মালিকের প্রশংসা করেন মালালা। তিনি বলেন, আসেরকে পেয়ে তিনি ভাগ্যবতী। কারণ আসের তার মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয়।
সম্প্রতি পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য আসের মালিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন মালালা ইউসুফজাই। ২৪ বছর বয়সি মালালা ৯ নভেম্বর ব্রিটেনে বার্মিংহামে পরিবারের উপস্থিতিতে বিবাহ সম্পন্ন করেন। যদিও এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে ভোগ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন— বিয়ে করতে হবে কেন? তার এ মন্তব্য ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়।
তবে রোববার দেওয়া সাক্ষাৎকারে মালালা প্রকাশ করেন যে, তিনি কখনও বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন না। তবে কিছু উদ্বেগ রয়েছে তার।
মালালা আরও বলেন, ‘আমরা যেই সিস্টেমে বাস করছি, সেখানে ভারসাম্যহীনতায় নারীরা কীভাবে পুরুষদের চেয়ে বেশি আপস করে থাকে তা আপনার মনে প্রশ্ন জাগিয়ে তুলবে’।
পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মেয়ে মালালা ইউসুফজাইয়ের জন্ম ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই। নারী শিক্ষার বিরোধী তালেবান জঙ্গিদের এলাকায় বসে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার পক্ষে বিবিসি ব্লগে লেখালেখি করে তিনি যখন পশ্চিমা বিশ্বের নজর কাড়েন, তখন তার বয়স মাত্র ১১ বছর।
নারী শিক্ষার পক্ষে কথা বলায় তাকে পড়তে হয় প্রাণনাশের হুমকির মুখে। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার মিনগোরাত এলাকায় ১৪ বছর বয়সি মালালা ও তার দুই বান্ধবীকে স্কুলের সামনেই গুলি করে তালেবান। পাকিস্তানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে বুলেট সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হলেও পরে যুক্তরাজ্যের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে, মালালার স্বপ্ন সফল করতে ২০১২ সালের ১০ নভেম্বরকে ‘মালালা দিবস’ ঘোষণা করে জাতিসংঘ।
তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানে ফিরতে না পারলেও মালালা যুক্তরাজ্যে থেকে তার লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, জর্ডান, সিরিয়া ও কেনিয়ার মেয়েদের শিক্ষার সহায়তায় গঠন করেন মালালা ফান্ড।
২০১৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘চরমপন্থিরা বই আর কলমকে ভয় পায়। তারা নারীদের ভয় পায়। তালেবানরা ভেবেছিল বুলেট দিয়ে আমাদের স্তব্ধ করে দেবে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
পরের বছর ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান মালালা, যিনি এখন যুক্তরাজ্যেই থাকছেন, লেখাপড়া শেষ করেছেন অক্সফোর্ড থেকে।