শিরোনাম
নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পেরে গত ১৫ বছরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলারের বেশি জরিমানা দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। এটিকে ‘খারাপ শাসনের’ আদর্শ উদাহরণ উল্লেখ করে বুধবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ বলেছে, ২০০৬ সাল থেকে দেশটিতে ক্ষমতায় থাকা বিভিন্ন সরকারের অদক্ষতার কারণে কষ্টার্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে মোটা অংকের অর্থ গচ্চা গেছে।
পাকিস্তানের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, স্বাক্ষরিত প্রকল্পগুলোতে প্রতিশ্রুতি চার্জ হিসেবে ০.১৫ শতাংশ অর্থ কাটে এডিবি। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো যদি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয় এবং নির্ধারিত অর্থ খরচ না হয়, তাহলে এডিবি’কে ওই জরিমানা দিতে হয়।
এসময় কর্মকর্তারা পাকিস্তান সরকারের বেশ কিছু খারাপ শাসনের উদাহরণ তুলে ধরেন। যেমন- ২০১৪ সালে কয়লাভিত্তিক জামশোরো বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল এডিবি। সেখানে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার দিতে চেয়েছিল দাতা সংস্থাটি। পরে খরচ কমিয়ে ৬৬০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়। কথা ছিল, প্রকল্পটি পাঁচ বছরের মাথায়, অর্থাৎ ২০১৯ সালে শেষ হবে। কিন্তু ২০২১ সাল শেষ হতে চললেও এখনো সেই কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত হয়নি। আর এখন পর্যন্ত এতে বরাদ্দ অর্থের অর্ধেকেরও কম, মাত্র ৩১৩ মিলিয়ন ডলার এডিবির কাছ থেকে নিতে পেরেছে পাকিস্তান।
বাজে শাসনের আরেকটি উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ সালে এডিবির অর্থায়নে স্মার্ট মিটারিং প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেই প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়েছে কিছুদিন আগে।
কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ২০০৬ সালে এডিবি’কে ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়েছে পাকিস্তান, ২০০৭ সালে দিয়েছে ৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন, ২০০৮ সালে আট মিলিয়ন, ২০০৯ সালে ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন, ২০১০ সালে নয় মিলিয়ন, ২০১১ সালে ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন, ২০১২ সালে ৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন, ২০১৩ সালে ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন, ২০১৪ সালে ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন, ২০১৫ সালে পাঁচ মিলিয়ন, ২০১৬ সালে ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন, ২০১৭ সালে ৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন, ২০১৮ সালে ৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন, ২০১৯ সালে ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন, ২০২০ সালে পাঁচ মিলিয়ন এবং ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের ধারণা, ২০০৬ থেকে চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশটির এডিবিকে দেওয়া জরিমানার পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।