গণতন্ত্রকামী নেতার মাকে তুলে নিয়ে গেলো মিয়ানমার সেনারা

ফানাম নিউজ
  ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০০:৪৩

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী এক নেতাকে না পেয়ে তার মাকে তুলে নিয়ে গেছে জান্তা বাহিনী। ধরতে না পেরে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আরেক নেতার বাড়ি। সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে দেশটির তানিনথারি অঞ্চলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ডেমোক্র্যাসি মুভমেন্ট স্ট্রাইক কমিটি দাউয়েই নামে স্থানীয় একটি জান্তাবিরোধী সংগঠনের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দাউয়েই এলাকায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ায় গত মার্চে তাদের দুই নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে জান্তা সরকার।

সোমবার রাতে গণতন্ত্রকামী নেতা কো ওয়াই ইয়ান সো ও তার চাচির বাড়িতে অভিযান চালায় জান্তা বাহিনী। অভিযানের সময় সরকারি বাহিনী ওই নেতার সব জিনিসপত্র নষ্ট করে এবং দুটি মোটরসাইকেল বাজেয়াপ্ত করে। এরপর কো ওয়াইকে না পেয়ে ফিরে এসে তার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায় জান্তা বাহিনী। পরে স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে ২০ সেনা ফিরে এসে সত্যি সত্যি বাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

একই রাতে ডেমোক্র্যাসি মুভমেন্ট স্ট্রাইক কমিটি দাউয়েইর আরেক নেতা কো মিন লুইন ও’র বাড়িতেও অভিযান চালায় জান্তা বাহিনী। এসময় অভ্যুত্থানবিরোধী নেতাকে না পেয়ে তার ৫৬ বছর বয়সী মাকে তুলে নিয়ে যায় মিয়ানমার সেনারা।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের কমিটি কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। বাড়িতে আগুন দেওয়া এবং জিম্মি করা জান্তা বাহিনীর কাপুরুষোচিত ও অশালীন কাজ।

ইরাবতির খবর অনুসারে, গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু করে গত ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিশু-বৃদ্ধসহ অন্তত ১৭৭ জনকে জিম্মি করেছে জান্তা সরকার, যাদের সবাই অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের পরিবারের সদস্য। ইদানিং জান্তাবিরোধী শক্তি পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে অনেকের বাড়ি ও ধনসম্পদ বাজেয়াপ্ত করছে দেশটির সামরিক সরকার।

অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামে স্থানীয় একটি সংগঠন জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত মিয়ানমারে ৯ হাজার ৫৯২ জনকে গ্রেফতার করেছে জান্তা বাহিনী। এছাড়া অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ-সহিংসতায় প্রাণ গেছে অন্তত ১ হাজার ২২৯ জনের।